আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দুই দশকের যুদ্ধ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তান ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছর ধরে অবস্থানের অবসান হলো। ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে সঙ্গে করে সর্বশেষ সি-১৭ বিমান কাবুল ছেড়েছে।
কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যারা এখনো কাবুল ত্যাগ করতে পারেননি, তাদের সহায়তা করার কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। খবর বিবিসির
সর্বশেষ বিমানটি কাবুল ত্যাগ করার পর কাবুলে তালেবানে বিজয়সূচক গুলির আওয়াজ শোনা গেছে। এই বিমানটির কাবুল ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ এবং তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ব্যাপক উদ্ধার অভিযানের অবসান হলো।
গত ১৪ই অগাস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল তালেবান। সেই সময় কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল মার্কিন সেনারা।
জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এবং জোট বাহিনীর বিমানগুলোয় করে সব মিলিয়ে এক লাখ ২৩ হাজার বেসামরিক ব্যক্তিকে সরিয়ে আনা হয়েছে। প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজারের বেশি বাসিন্দা কাবুল ছাড়ার সুযোগ পেয়েছেন।
এই ঘোষণা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন ওয়াশিংটনে বলেছেন, এটি ছিল ‘ব্যাপক সামরিক, কূটনৈতিক এবং মানবিক কর্মযজ্ঞ’, যা যুক্তরাষ্ট্র অনেক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো। সামরিক মিশন সমাপ্ত হয়ে নতুন এক কূটনৈতিক মিশন শুরু হল।’
তবে ব্লিংকেন এও বলেছেন যে, তালেবানকে বৈধতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কিনা এবং নাগরিকদের ভ্রমণে স্বাধীনতা দেয়া, নারীদের অধিকার রক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দমন করছে কিনা-এসব বিষয় বিশ্ববাসীর নজরে থাকবে।
তিনি জানিয়েছেন, কাবুলে কূটনৈতিক মিশন স্থগিত করে দোহায় নিয়ে যাওয়া হলেও মার্কিন নাগরিক এবং যে আফগানদের যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট রয়েছে, তারা চাইলে তাদের আফগানিস্তান ছাড়তে সহায়তা করবে।
গত ১৭ দিন ধরে চলা এই উদ্ধার অভিযানে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি শিগগিরই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারেন।