বান্দরবান: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির মাইন বিস্ফোরণে এক সপ্তাহে চারজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এক বছরে পা বিচ্ছিন্নসহ গুরুতর আহত হয়েছেন ২০-২৫ জন। এতে এলাকায় আতঙ্ক বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের লাল কাইন্দা এলাকায় মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মো. ইউনুছ (২৫) নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের ডান পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ইউনুছ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা এবং এজাহার হোসেনের ছেলে।
সূত্র জানায়, আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরিত হলে ইউনুছ গুরুতর আহত হন। এ সময় সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকা থেকে তার চিৎকার শুনে দুইজন বাংলাদেশি যুবক ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উখিয়ার কুতুপালং এম এস এফ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে চারজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বারবার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
এর আগে গত বুধবার মাইন বিস্ফোরণে ওমর মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবকের বাম পায়ের গোড়ালির নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন যায়। সীমান্তের জারুলিয়া ছড়ি বিওপির ৪৬, ৪৭ পিলারের ৪০০ মিটার দূরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এঘটনা ঘটে।
ওমর মিয়া কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের মৌলভীকাটা এলাকার বাসিন্দা সাবের মিয়ার ছেলে।
এরও আগে গত সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের চাকমার কাটা সীমান্ত এলাকায় ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে ওপার থেকে বাংলাদেশে চিকিৎসা জন্য আসার পথে মাইন বিস্ফোরণে মিয়ানমারের রাখাইন যুবকের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। ওই ব্যক্তির নাম ওলিমং তংচঙ্গ্যা। তিনি রাখাইনের মেদাই গ্রামের চাবংর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন এই যুবক সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে থেকে বাংলাদেশে চিকিৎসার জন্য অনুপ্রবেশ করার সময়ে মাটিতে পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়।
গত রোববার একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের জামছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আরাফাতুল ইসলাম প্রকাশ বাদল নামে এক বাংলাদেশি তরুণের বাম পায়ের নিচের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আরাফাতুল ইসলাম সদর ইউনিয়নের জামছড়ি গ্রামের খুইল্লা মিয়ার ছেলে। স্থানীয়রা জানান, জামছড়ি সাপমারা ঝিরি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে চোরাই পণ্য আনতে গিয়েছিল চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা।
এ সময় সীমান্তের শূন্যরেখায় মিয়ানমারের আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরিত হয়ে বাংলাদেশি তরুণের বাম পায়ের নিচের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে স্থানীয়রা সীমান্তে গেলে আহত আরাফাতকে দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তারা। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।