বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে বেশিরভাগ স্বল্পমূলধনি ও দুর্বল ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে। এবং এসব কোম্পানির পিই রেশিও এখন সবচেয়ে বেশি। এজন্য কেন স্বল্পমূলধনী ও দুর্বল ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে সেটিও অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।’
লোকসানি, আয় কম, কিন্তু শেয়ার দর কেন বেড়েই চলেছে- তা জানতে চায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
চিঠিতে যেসব কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৪০ এর বেশি, সেগুলোর বিষয়ে তথ্য চাওয়ার পাশাপাশি এসব কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণ দেয়া হচ্ছে কি না তা নিয়েও অনুসন্ধান চালাতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বল্প মুলধনি ও দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদরের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে তুমুল আলোচনার মধ্যে বুধবার এই চিঠি দেয়া হয়। এর আগে এই ধরনের কোম্পানিগুলো নিয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি প্রতিবেদন দেবে ৩০ কর্মদিবস পর।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যেসব কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর বেশি সেগুলোর বিষয়ে ডিএসইর কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। ২০১০ সালের একটি নির্দেশনা আছে, যেসব কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর বেশি সেগুলো নন মার্জিনেবল। মানে এসব কোম্পানির বিপরীতে কোনো ঋণ সুবিধা দেয়া হবে না। সে নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না সেটি যাচাই করতে বলা হয়েছে।
‘পাশাপাশি বর্তমানে বেশিরভাগ স্বল্পমূলধনি ও দুর্বল ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে। এবং এসব কোম্পানির পিই রেশিও এখন সবচেয়ে বেশি। এজন্য কেন স্বল্পমূলধনী ও দুর্বল ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে সেটিও অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।’
দুর্বল কোম্পানিতে লাগাম পরাতে বিএসইসির আরেক উদ্যোগ
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি
এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বক্তব্য জানতে পারেনি । সংস্থাটির মুখপাত্র ও উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
পিই রেশিও কী
কোনো কোম্পানির শেয়ার প্রতি যে আয়, তা দিয়ে কোম্পানির শেয়ারদরকে ভাগ করলে যে ফল আসে, তা মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও নামে পরিচিত।
পুঁজিবাজারে ২৫ পর্যন্ত পিই রেশিওকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটিই একমাত্র নির্ণায়ক নয়। সম্ভাবনাময় কোম্পানি হলে এরচেয়ে বেশি পিই রেশিওতেও বিনিয়োগ করা যায়।
বিএসইসিও বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের (বিনিয়োগকারীদের মূলধনের বিপরীতে যে ঋণ দেয়া ঞয়) যে নীতিমালা করেছে, তাতে কোনো কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ হলে সেটি ঋণ পাওয়ার যোগ্য।
দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে পিই রেশিও সবচেয়ে কম ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে। ব্যাংক খাতে ৪ এর কম পিই রেশিও এমন কোম্পানিও আছে। ১০ এর বেশি পিই রেশিও আছে, এমন কোম্পানির সংখ্যা ৩২টির মধ্যে কেবল ১০টি।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে বেশিরভাগ ফান্ডের পিই রেশিও এখন ৪ থেকে ৫ এর মধ্যে।
তবে দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ দেয় না, আয় নেই, অথবা আয় একেবারেই নগণ্য এমন বহু কোম্পানির শেয়ারদর এখন আকাশচুম্বি। লভ্যাংশ আসার ইতিহাস নেই বা অদূর ভবিষ্যতে সম্ভাবনা নেই, এমন কোম্পানির শেয়ারদর অভিহিত মূল্যের ৩০ বা ৪০ গুণ বা তার চেয়ে বেশি দামে লেনদেন হচ্ছে, এমন ঘটনাও আছে।
কোনো কোনো কোম্পানির পি ই রেশিও পাঁচ হাজারের কাছাকাছিও আছে।