বরিশাল : ছাত্র-জনতার রক্তেভেজা অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট বিজয় অর্জিত হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত দেশের পটপরিবর্তনের পরও আঁতাতের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা বা দোসররা। আওয়ামী ফ্যাসীবাদের অবসান হয়েছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা এখনো অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়ে গেছেন। যদিও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিস্টদের আর্শিবাদপুষ্টরা ছাত্র-জনতার তোপেরমুখে পড়েছেন। কোন কোন কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায়ও আনা হয়েছে। কিন্তু বরিশাল গণপূর্ত বিভাগে পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে দেওয়া হয়নি। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুবিধাভোগী ফয়সাল আলম। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নৌকার ব্যাচ বুকে লাগিয়ে সর্বত্র বিচরণ করতেন তিনি। নিজেকে তিনি জাহির করতেন মস্তবড় আওয়ামী লীগার।
অভিযোগ উঠে- স্বৈরাচারের শাসনামলের মতো দাপিয়ে বেড়াতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরও পদ পদবী ও আধিপত্য ধরে রাখতে বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন ফয়সাল আলম। এরইধারাবাহিকতায় তিনি নিজেকে বিএনপি ঘরোনার ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নানা কায়দায় অপতৎপরতায় চালিয়ে আসছেন। অপতৎপরতার অংশ হিসেবে স্বৈরাচার শাসনামলের অন্যায়-অপকর্ম অন্ধকারে রেখে খোলস পাল্টিয়ে তিনি ইতোমধ্যে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের তালিকায় নাম লিপিবদ্ধ করেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর বরিশালে নবগঠিত কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে আসীন হন বহুল বিতর্কিত নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা হরণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও গুম-খুনের মাধ্যমে মানুষের প্রতিবাদের সব কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়ার স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিতায় মত্ত ছিলেন ফয়সাল আলমের মতো কর্মকর্তারা। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার রুদ্র রোষ থেকে বাঁচতে স্বৈরাচারি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে চলে গেলেও গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা তার ছত্রছায়ায় অন্যায়-অনিয়মের কালো অধ্যায় সৃষ্টি করে দেশের সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার-নির্যাতনের স্টীম-রোলার চালিয়েছিল, সেই সব সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ, সরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক টাউটদের চিহৃিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকরের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে।
অনুসন্ধানী সূত্রগুলো বলছে, ৩২তম বিসিএস’র বহুল বিতর্কিত ফয়সাল আলমের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তঘর এলাকায়। খুলনায় তিনি পড়ালেখা করেছেন। প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে ফয়সাল আলম ঝালকাঠিতে দীর্ঘদিন একই চেয়ার আঁকড়ে ধরে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নিজেকে বড় আওয়ামীলীগার হিসেবে জাহির করতেন তিনি। রাজনৈতিক অঙ্গন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন মহলে আমির হোসেন আমুর দালাল হিসেবেও বেশ পরিচিত প্রকৌশলী ফয়সাল আলম। ঝালকাঠিতে আমুর আস্তাভাজনে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে সাধারণ ঠিকাদারদের তোপেরমুখে পড়েছিলেন তিনি। একপর্যায়ে ঝালকাঠির ঠিকাদাররা দুদকে অভিযোগও দিয়েছিলেন। দোর্দন্ড প্রভাবশালী আমুর আর্শিবাদপুষ্ট হওয়ায় কোনভাবেই তার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হয়নি। ঝালকাঠি থেকে বরিশাল গণপূর্তে দায়িত্ব নেওয়ার পর সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন বনে গিয়ে নানা ধরণের অন্যায়-অনিয়মে জড়িয়ে পড়লেও তৎকালীন সময়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির ঝালকাঠি শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী ও সাংবাদিক আক্কাস সিকদার ইউনিভার্সেল নিউজকে বলেন, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম ঝালকাঠিতে দায়িত্ব পালন অবস্থায় সরকারি নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমুর ব্যক্তিগত পারপাস সার্ভ করেছেন। এক্ষেত্রে অনিয়মের মাধ্যমে আমুর পছন্দের ঠিকাদারদের কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে একচ্ছত্রভাবে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। এরফলে সাধারণ ঠিকাদাররা বঞ্চিত হয়েছেন। এককথায় প্রকৌশলী ফয়সাল আলম স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, খান ব্লিডার্স ও খান ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মিজান খান ওরফে কাশি মিজান এবং নাসির খান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ক্রেডিট কার্ড নামে পরিচিত পান। এরা বিগত স্বৈরাচারের শাসনামলে একচেটিয়েভাবে গণপূর্তের কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন। ৫ আগস্টের পর দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও বহুল বিতর্কিত এই দুই প্রতিষ্ঠান এখনও বরিশাল গণপূর্ত বিভাগে অদৃশ্য শক্তিতে নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী ফ্যাসীবাদের সুবিধাভোগী দোসর হিসেবে আখ্যায়িত নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম এর সঙ্গে বিতর্কিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর গভীর সখ্যতা বজায় রেখে তাদেরকে কাজ পাইয়ে দিয়ে আসছেন। ৫ আগস্টে পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে নির্বার্হী প্রকৌশলী ফয়সাল আলমের বদলীর আদেশও হয়। স্বার্থ হাসিলের জন্য উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুটি নানা কলকাঠির মাধ্যমে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় তার বদলীর আদেশ বাতিল করে স্ব স্থানে বহাল রাখতে সক্ষম হন।
গণপূর্তের সাধারণ ঠিকাদার আব্দুর রহিম বলেন, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম এরআগে ঝালকাঠি দায়িত্ব পালন করার সময়ও তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ ঠিকাদাররা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ দিয়েছিলেন ঠিকাদাররা। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমির হোসেন আমুর আর্শিবাদপুষ্ট হওয়ায় তিনি পাড় পেয়ে যান। এরপর বদলী হয়ে বরিশাল গণপূর্তে যোগদান করার পর ব্যাপক অনিয়মের জন্ম দিয়ে আসছেন। নিয়ম ভঙ্গ করে তিনি একচেটিয়েভাবে ঝালকাঠির বাসিন্দা নাসির খানের মালিকানাধীন খান বিল্ডার্স ও শহরতলীর কাশিপুরের বাসিন্দা মিজান খানের খান ট্রেডার্স নগরীর বড়-ছোট সকল ধরণের বাজেটের শত শত কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। সূত্রের ভাষ্য, বরিশাল মেরিন একাডেমি, বঙ্গবন্ধু নভ থিয়েটার, ক্যান্সার হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক), শায়েস্তাবাদের তালতলী মডেল মসজিদ, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল মেট্রােপলিটনের এয়ারপোর্ট থানা, আমানতগঞ্জে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রিপেয়ারিংয়ের কাজ সহ আরো অনেক কাজ প্রতিষ্ঠান দুটিকে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে পাইয়ে দিয়েছেন। এরমধ্যে মডেল মসজিদ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে পরবর্তীতে তা ক্ষমতার দাপুটে শক্তিতে ধামাচাপা দেওয়া হয়। বিশেষ করে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ও নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলমের যোগশাজসে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণে খান বিল্ডার্সকে ৯০ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে হাসপাতাল নির্মাণ কাজে আরো ৮০ কোটি ভাগিয়ে নেওয়ার কৌশলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি অর্থ বর্ধিতকরণের জন্য রিভাইস স্টিমেট দাখিল করে নানামুখী দৌঁড়ঝাপ চালিয়ে আসছেন।
গণপূর্তের ঠিকাদার তসলিম মৃধা বলেন, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্তহীন অভিযোগ। তিনি সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নৌকার ব্যাচ লাগিয়ে সর্বত্র বিচরণ করতেন। নিজেকে জাহির করতেন তিনি কট্টরপন্থী আওয়ামী লীগার। আমির হোসেন আমুর হয়ে নৌকার প্রচারণা চালিয়েছেন। আমুর আর্শিবাদ পেয়ে ঝালকাঠিতে গণপূর্তের দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে যতসব অন্যায়-অনিয়ম করে পাড় পেয়ে যেতো। একপর্যায়ে সেখানকার ক্ষুদ্ধ ঠিকাদাররা ফয়সাল আলমের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে বরিশালে আসার পর এখানকার গণপূর্ত বিভাগও দুর্নীতির আতুরঘরে পরিণত করে। গোপন বুনিবনায় মোটা অঙ্কের বিনিময়ে একচ্ছত্রভাবে খান বিল্ডার্স ও খান ট্রেডার্সকে কাজ পাইয়ে দিচ্ছে।
এদিকে, মডেল মসজিদ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের ভবন) এবং আনসার ভবন সহ ৭ গ্রুপের কাজে অনিয়মের মাধ্যমে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান খান ব্লিডার্স ও খান ট্রেডার্সকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করে আসছেন নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম। এ নিয়ে গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল গণপূর্ত ভবনে সাধারণ ঠিকাদাররা প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদেরকে একহাত দেখিয়ে দিতে নির্বাহী প্রকৌশলী উদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করেন।
গণপূর্ত বরিশাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুটি উপজেলা মডেল মসজিদের ৫ সেপ্টেম্বর টেন্ডার ওপেনিংয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে গণপূর্ত বিভাগ। তবে তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওয়ার্ক ক্যাপাসিটি না থাকার কারণে তিন মাস পর উক্ত টেন্ডার দুটি বাতিল করা হয়। বাতিলকৃত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- খান ট্রেডার্স, খান ব্লিডার্স, ইউনুস এণ্ড ব্রাদার্স। ২৩ জানুয়ারী বাতিলকৃত দুটি মডেল মসজিদ সহ আরো তিনটি মডেল মসজিদের ড্রর্পিয়ের দিনক্ষণ ধার্য করে গণপূর্ত বিভাগ। এরপর গোপন বুনিবনার সমাঝোতার মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাবর এ্যাসোসিয়েট ও খান ট্রেডার্স (জেবি), এবং এস.এ এন্টারপ্রাইজ ও খান ব্লিডার্স (জেবি) কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য টেন্ডারের নিয়ম কানুন ভঙ্গ করে নানা ধরণের কুটকৌশল অবলম্বন করা হয়।
সাধারণ ঠিকাদারদের প্রশ্ন- যে প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়ার্ক ক্যাপসিটি না থাকার কারনে এক মাস আগে টেন্ডার রিটেন্ডার করেছে সেই একই প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে পূণরায় জেবির মাধ্যমে পরবর্তীতে একই টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে?
প্রসঙ্গত : জেবির শর্তাবলীতে লিড পার্টনার ৪০%, সহযোগী পার্টনারস ২৫% টেন্ডারের শর্তবলীতে উল্লেখ থাকলেও সেই শর্তাবলী ভঙ্গ করে লিড পার্টনার ১০%, সহযোগী পার্টনার ৯০% এর কথা বলে নির্বাহী প্রকৌশলী তার পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।
এই টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে সোমবার দুপুরে বরিশাল মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম শাহীন ও আব্দুর রহিম গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে আসেন। তাদের আলোচনার মধ্যেই সাবেক ছাত্রনেতা ঠিকাদার এটিএম আশরাফুল হক রিপনও উপস্থিত হন। একসময়ের তুখোড় এই ছাত্রদল নেতা এহেন অনিয়মের মাধ্যমে টেন্ডারে অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার পাঁয়তারার বিষয়টি যৌক্তিক আলোচনায় প্রতিবাদ করেন। তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চেয়েছেন যে- ওয়ার্ক ক্যাপাসিটি না থাকার পরও কিভাবে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো উক্ত টেন্ডারে অংশগ্রহন করেছেন? এরকম প্রশ্নে নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম ও তার অপকর্মের সহযোগিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে হট্টোগোলের সৃষ্টি করে। দুর্নীতির ডালপালার সঙ্গে জড়িতরা উল্টো ঠিকাদার রিপন সহ অন্যান্য সাধারন ঠিকাদারদের হুমকি প্রদান করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেন যে- যেসব ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলমের বিরুদ্ধচারণ করবে তাদের লাইসেন্স কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ফয়সাল আলম সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার দুপুরে আমার কার্যালয়ে এসে ঠিকাদার রিপন ও তার দলবল আমার টেবিল চাপড়ে হুমকি দিয়ে গেছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলমের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে এ প্রতিবেদক ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার তার মুঠোফোনে অসংখ্যবার ডায়াল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
বিএম কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাকসুর সাবেক পরিবহন সম্পাদক ঠিকাদার এটিএম আশরাফুল হক রিপন বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলীর পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্ক ক্যাপাসিটি ছিলনা। আমি এ বিষয়ে দুনীর্তি দমন কমিশন (দুদক) সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। যার প্রেক্ষিতে তিন মাস ঘুরিয়ে নতুন করে রিটেন্ডার দেয়া হয়। কিন্তু ফের সেই প্রতিষ্ঠানগুলি আবার দরপত্র দিয়েছে। কিন্তু আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দেওয়ার জন্য নানাভাবে কুটকৌশল করে আসছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় তার সাথে। সাধারন ঠিকাদারদের প্রতিবাদ করার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নিবার্হী প্রকৌশলী ঠিকাদার কর্তৃক লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমকারীদের কাছে প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে জড়িয়ে সাংবাদিকদের কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোপুরি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে প্রকৌশলী একবার টেন্ডার করে যখন তার পছন্দের প্রতিষ্ঠান কাজ দিতে পারছিল না। তখন নানাভাবে ছলচাতুরি করে প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাপাসিটি না দেখিয়ে ফের রিটেন্ডার করে। আমি কাউকে লাঞ্ছিত করিনি। আমার দরপত্রে কি কি সমস্যা আছে জানতে গিয়েছিলাম।