ঢাকা : সরকারের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, এদের দিন শেষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যুবদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দিন শেষ হয়ে এসেছে, ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করুন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন করোনার পর ও ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে জিনিসপত্রের দাম সব জায়গায় বেড়েছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে থেকে শুরু হল? আর কবে থেকে দেশের মানুষ চিৎকার করছে যে তেলের দাম কমাও, চালের দাম, ডালের দাম কমাও আমরা আর পারছি না। করোনাকালীন দুই বছরে যে চুরি, যে ডাকাতি আপনারা করেছেন স্বাস্থ্যখাতে। বড় লোকদের সরকারি টাকা দিয়ে বড়লোক করেছেন, গরীবকে গরীব করেছেন। সে কথার জবাব টা কে দেবে প্রধানমন্ত্রী?
এই সরকার বাজারের উপর কোন নিয়ন্ত্রন করতে না পারার প্রধান কারণ হচ্ছে সিন্ডিকেট ও আওয়ামী লীগ ব্যবসায়ী। ফলে তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে। ৭২ থেকে ৭৫ সালে যাওয়া হয়েছিল আবারো তারা তাই করছে? দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা সহ্য করতে করতে সহ্য করা শিখে গেছি।
‘সরকারের অন্যায় নিপীড়ন বন্ধ করতে হলে দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে, দেশে যাতে পুনরায় দুর্ভিক্ষ না হয় সে জন্য সরকারকে হটানো বিকল্প নাই। সরকার যদি আরো বেশি কিছু দিন ক্ষমতায় থাকে, তাহলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে অস্তিত্ব থাকবে না’।
তিনি আরও বলেন, আদালতকে ব্যবহার করে বিতর্ক রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর জন্যই দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল। সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশে দুর্নীতির আখড়া গড়ে তোলে সিন্ডিকেট ও প্রজেক্টের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি করতে টাকা পাচার করছে, যা সামাজিক মাধ্যমে উঠে এসেছে। তারা আমাদের ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সবকিছু কে ধ্বংস করে দিয়েছে।
‘গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে খালেদা জিয়া আজ অসুস্থ অবস্থায় বন্দি রয়েছেন। আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দিন শুরু হয় কোর্টে হাজিরা দেওয়ার মাধ্যমে।’
দলের নেতাকর্মীদেরকে আন্দোলন সংগ্রামের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রুখে দাঁড়াতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে পরাজিত করার মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরব এর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালাম, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরুসহ যুব দলের নেতারা।
যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশে সকাল দশটা আগে থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিলে নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করে। নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে এ সময় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।