নারীরা কমবেশি মেকআপ ব্যবহার করেন। প্রাচীন কাজল থেকে শুরু করে আধুনিক হাই-ডেফিনিশন ফাউন্ডেশন, এসব সৌন্দর্য প্রকাশের মাধ্যম। তবে মেকআপ কি ত্বকের পিগমেন্টেশন বা দাগ-ছোপের কারণ হতে পারে নাকি এমন প্রশ্ন থেকেই যায়। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রখ্যাত ডার্মাটোলজিস্ট ডা. রিঙ্কি কাপুর এই বিষয়ে জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
মেকআপ কি সরাসরি পিগমেন্টেশন ঘটায়: পিগমেন্টেশন তখন হয় যখন ত্বক অতিরিক্ত মেলানিন উৎপাদন করে। সূর্যের আলো, হরমোনের অসামঞ্জস্য, ব্রণ বা আঘাতের পর প্রদাহ, কিছু ওষুধ এবং বংশগত কারণ এর পেছনে দায়ী। এছাড়াও অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি পিগমেন্টেশনের অন্যতম কারণ।
বিশেষজ্ঞের মতে, ফাউন্ডেশন, কনসিলার বা লিপস্টিক ব্যবহার সরাসরি দাগ-ছোপ তৈরি করে না। তবে নিম্নমানের বা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য, ভারী ফাউন্ডেশন যা ছিদ্র বন্ধ করে দেয়, অথবা কড়া রাসায়নিক ও সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনী ত্বকে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। এ থেকেই দেখা দেয় পোস্ট-ইনফ্ল্যামেটরি হাইপারপিগমেন্টেশন। এছাড়া দীর্ঘ সময় মেকআপ পরে থাকা এবং সঠিকভাবে পরিষ্কার না করাও ঝুঁকি বাড়ায়।
কোন উপাদানগুলো এড়িয়ে চলা উচিত: ডা. কাপুর জানান, সুগন্ধি, মিনারেল অয়েল, ও কিছু প্রিজারভেটিভ ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। আবার সানস্ক্রিনবিহীন মেকআপ পণ্য ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির সামনে ফেলে দেয়, যা পিগমেন্টেশনের প্রধান কারণ। তাই ডার্মাটোলজিস্ট-পরীক্ষিত, নন-কমেডোজেনিক ও হাইপোঅলার্জেনিক পণ্য ব্যবহার করা উচিত।
জীবনধারা ও প্রাকৃতিক প্রতিকার
প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস
প্রচুর পানি পান
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
এছাড়া অ্যালোভেরা, গ্রিনটি এক্সট্রাক্ট বা হলুদ ব্যবহার সহায়ক হতে পারে, তবে এগুলোকে প্রাথমিক নয়, বরং সহায়ক সমাধান হিসেবে দেখতে হবে।
চিকিৎসা ও নিরাপদ সমাধান
ভিটামিন সি, কোজিক অ্যাসিড, রেটিনয়েড বা আজেলাইক অ্যাসিডযুক্ত ক্রিম
কেমিক্যাল পিল
লেজার থেরাপি
মাইক্রোডার্মাব্রেশন
এসব পদ্ধতি অবশ্যই বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করা উচিত। তবে মূল প্রতিরোধ হলো নিয়মিত সান প্রটেকশন।
মেকআপ সরাসরি পিগমেন্টেশনের কারণ নয়। আসল সমস্যা হলো নিম্নমানের প্রসাধনী, সঠিক যত্নের অভাব, অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি অবহেলা। তাই মানসম্মত পণ্য বেছে নেওয়া, সানস্ক্রিন ব্যবহার, নিয়মিত ত্বকের যত্ন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভ্যাস গড়ে তুললেই মেকআপ ব্যবহার করা যাবে নিশ্চিন্তে।