শিরোনাম
ভোলায় মহিলা নেত্রীকে রশি দিয়ে বেঁধে বিএনপি নেতার নির্যাতন, ছবি ভাইরাল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নতুন ৫ দেশ ক্যানসার থেকে বাঁচুন ব্যায়াম করে দুই ইসরায়েলিকে হত্যার পর ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেন ওই যুবক হাতিরঝিল-বনশ্রী-আমুলিয়া-ডেমরা প্রকল্পে জমি অধিগ্রহনের মূল্য পরিশোধে ব্যাপক দুর্নীতি (পর্ব-১) জামিন পেলেন নুসরাত ফারিয়া হাতিরঝিল-বনশ্রী-আমুলিয়া-ডেমরা প্রকল্পে জমি অধিগ্রহনের মূল্য পরিশোধে ব্যাপক দুর্নিতি আলোচিত দুর্নীতিবাজ জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল বহাল তবিয়তে! শিরোপা জয়ের রাতে অপ্রত্যাশিত হার বার্সার, সহজ জয় রিয়ালের নিজেই মাদকাসক্ত মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা; মাসে মাসোহারা আদায় ৭লাখ!

শুধু ১০০ দিনেই ওলটপালট করেছেন সব

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১০০ দিনে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রমাণ করেছেন—তিনি এসেছেন ঝড় তুলতে। এই অল্প সময়েই তিনি ১৪০টির বেশি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যেগুলোর অনেকটাই আমেরিকার বহু দশকের নাগরিক অধিকার ও নীতির ধারাকে বদলে দিয়েছে।

এ দ্রুতগতির প্রশাসনিক কৌশলকে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টারা বলছেন ‘ফ্লাডিং দ্য জোন’—অর্থাৎ এত বেশি ও দ্রুত নীতিগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে যে বিরোধিতা সংগঠিত হওয়ার সুযোগই থাকছে না। অভিবাসন নীতি, বাণিজ্যনীতি, শিক্ষাঙ্গনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে হঠাৎ একের পর এক সিদ্ধান্তে আমেরিকার প্রশাসনিক কাঠামো যেন তোলপাড় হয়ে উঠেছে।

ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প বিতর্কিত নিয়োগের মাধ্যমে প্রশাসনের চেহারাই পাল্টে দিয়েছেন। দক্ষ টেকনোক্র্যাটদের বদলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসিয়েছেন দলীয় অনুগতদের, যার ফলে অনেক সিদ্ধান্তে ভারসাম্য ও যুক্তির অভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার সিদ্ধান্তে বড়সড় প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলে দিয়ে তিনি কার্যত গাজা দখলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এর ফলে কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষতার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দেশের ভেতরে আরও নজরে পড়ছে শিক্ষাঙ্গনের দমননীতি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলন দমন করা হচ্ছে পুলিশের হাতে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। এতে বিদেশি শিক্ষার্থীরা আমেরিকায় নিজেদের আর নিরাপদ মনে করছেন না।

এদিকে, ট্রাম্প নিজের ভাষণে আবারও তুলে ধরেছেন ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগান। তবে ১৮০০-এর দশকে আমেরিকা গ্রেট ছিল—অথচ তখন বর্ণবৈষম্য, সাম্রাজ্যবাদ আর ধনিক শ্রেণির আধিপত্য ছিল। এই ইতিহাস ঘেঁটে তার বর্তমান রাজনৈতিক লক্ষ্য যে কতটা পশ্চাৎমুখী, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

বাণিজ্যনীতিতে ট্রাম্পের কড়া অবস্থানও নানা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তিনি শুল্ক আরোপের যে প্রবণতা নিয়েছেন, তাতে বিশ্বব্যাপী আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমে যাচ্ছে। বহু দেশ এখন আমেরিকার বিকল্প বাণিজ্য-সহযোগী খুঁজছে।

এর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে বেড়েছে ভয় আর অনিশ্চয়তা। মুসলিমবিরোধী বক্তব্য, অভিবাসন-বিরোধী নীতির ঘৃণা ছড়ানো প্রচারণা সমাজে বিভাজন তৈরি করছে। হোয়াইট হাউজ যেন এখন ঘৃণার রাজনীতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

তবু আশার কথা, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিনই চলছে ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলন ও প্রতিবাদ। নাগরিক সমাজ, শিক্ষার্থী, মানবাধিকারকর্মী—অনেকেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিচার বিভাগ এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত আটকে দিচ্ছে। এসব প্রতিরোধই আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের শেষ ভরসা।

তবে কংগ্রেসের ভূমিকা অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘জনগণের শাখা’ হিসেবে পরিচিত কংগ্রেস এখন কার্যত ভীত ও নিষ্ক্রিয় অবস্থানে চলে গেছে।

সব মিলিয়ে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনেই যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন বাস্তবতা। কেউ একে বলছেন ‘নিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খলা’, কেউ বলছেন ‘গণতন্ত্রের ভয়াবহ পরীক্ষা’। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—এই আমেরিকা আগের আমেরিকা নয়।

উল্লেখ্য, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে ২০ জানুয়ারি জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প।

দ্য নিউ আরবের তথ্য অবলম্বনে

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com