শিরোনাম
লিলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় লিভারপুল বঙ্গভবন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এখনো ‘অ্যাডমিন ক্যাডার’ হিসেবে কর্মরত সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এস কে সুরের গোপন ভল্টের সন্ধান বলিউড থেকে সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কারণ জানালেন নার্গিস মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুর্নীতির মহারাজা ইনাম ইলাহী চৌধুরী লস অ্যাঞ্জেলেসে কষ্টের কথা জানান নোরা শেষ মুহূর্তে উসমান ম্যাজিক, হ্যাটট্রিক শিরোপা পিএসজির আসিফ নজরুলকে শেখ হাসিনার বিষয়ে যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া নারী সহকর্মীকে খুন করে দেহ ২৬ টুকরো, অতঃপর…… ২৯ সেপ্টেম্বর দেখা যাবে দ্বিতীয় চাঁদ, থাকবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত

ননসেন্স কথা বলার অপরাজেয় পুত্র জয়’ বিদেশে থেকে বিশৃংখলার উস্কানি দিচ্ছে: রিজভী

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘যারা মিথ্যা প্রপাগান্ডা করছে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরকে স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যেন কেউ ধ্বংস করতে না পারে। গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও লক্ষ্য সুসংহত করতে হলে পতিত গণবিরোধী শক্তিকে আইনের মুখোমুখি করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানো অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মুখে গণহত্যাকারী “বাংলাদেশের লেডি দানব” হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসান ঘটেছে। অবৈধ ক্ষমতার হুমকি আর বারুদের মুখোমুখি হয়ে শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সহস্রাধিক মানুষের তাজা প্রাণ ও কয়েক হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। এখন সুযোগ এসেছে দেশে জবাবদিহিতামূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং জনপ্রত্যাশা পূরণের জন্য অতীতের সব জঞ্জালমুক্ত একটি বৈষম্যহীন নিরাপদ এবং মানবিক আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার। নির্যাতিত-নিপীড়িত, লাঞ্চিত-বঞ্চিত অধিকারহারা মানুষ একটি স্বাধীন, নিরাপদ এবং মর্যাদাকর জীবনের প্রত্যাশায় উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। ফ্যাসিবাদী হাসিনার ভয়ংকর দুঃশাসনের জীবনাবসান ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গত ১৬ বছর ধরে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী মানুষ নিরন্তর আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছিল। এই আন্দোলন করতে গিয়ে-অসংখ্য মানুষ গুম-খুন, জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, উৎপীড়ন, অমানবিক অত্যাচার বর্বরতার নির্মম শিকার হয়েছেন। অপহৃত হয়েছেন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু ও অন্ধ হয়েছেন। আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় শেষপর্যন্ত ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি-দেশ ভারতে পালিয়েছে। পলাতক হাসিনা ও তার অবিরাম ‘ননসেন্স কথাবলার অপরাজেয় পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়’ বিদেশে থেকেই এখনও দেশে ষড়যন্ত্র ও বিশৃংখলার উস্কানি দিচ্ছেন।

রিজভী বলেন, এদেশের আইন-আদালত, পুলিশ, সিভিল প্রশাসনসহ প্রতিটি সেক্টরে স্তরে-স্তরে সাজিয়ে রাখা হয়েছিলো ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামীলীগের ক্যাডারদের দিয়ে। এরা আওয়ামী যাদুর চশমা পরে গোটা দেশকে বাকশালী কর্তৃত্ববাদের কারাগার হিসেবে দেখতো এবং জনগণকে বন্দি হিসেবে মনে করে তাদের ওপর চালাতো পৈশাচিক বর্বরতা। এই হাসিনা লীগের ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা এখনো বহাল আছে এবং বড় ধরণের নাশকতার চক্রান্ত এঁটে যাচ্ছে। এরা কিছুদিন আগে ত্রিভুবন দাপিয়ে বেড়াতো। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দৃঢ় ও নিবিড় যোগসূত্র এখনো বিদ্যমান রেখেছে, তারা নানা ইস্যু ও কথিত দাবি তুলে আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে। ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন স্থানে দখল-লুটতরাজ, চাদাবাজী করছে। মিথ্যা প্রপাগান্ডা করছে। তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরকে স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অবিলম্বে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এখন সময় এসেছে গত ১৬ বছর যারা নির্যাতন চালিয়েছেন, তাদের প্রকৃত তালিকা করে বিচার করার। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যেন কেউ ধ্বংস করতে না পারে। গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও লক্ষ্য সুসংহত করতে হলে পতিত গণবিরোধী শক্তিকে আইনের মুখোমুখি করার পাশাপাশি জনগণের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে মজবুত ও শক্তিশালী করার সার্বজনীন প্রচেষ্টা চালিয়ে সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অত্যান্ত গভীরে প্রোথিত করাসহ রাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রের বিকাশ সাধন করতে হবে। বিকৃতির মাধ্যমে ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে যেভাবে বিপন্ন করা হয়েছে, সেটিকে সংস্কার করে প্রকৃত বিষয় পুনরুদ্ধার করতে হবে। বাকশালের পুনর্মুদ্রণ যেন আর কখনোই না হয়, সেটির চিরস্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, অন্তবর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। রাষ্ট্রের বিবর্তনে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র রাজনৈতিক সংগ্রাম বা বিপ্লবেরই ফলশ্রুতি। কোনভাবেই বি-রাজনীতি করণের আভাস যেন ফুটে না ওঠে। আমরা এখনো গভীর উদ্বেগের সাথে অবলোকন করছি যে, দূর্নীতি দমন কমিশন-দুদক ফ্যাসিবাদের আমলেরই সাজানো দুদকেরই কার্যক্রম চলছে। নির্বাচন কমিশন সেই লীগ কমিশন যারা শেখ হাসিনার অবৈধ ভোটকে ন্যায্যতা দান করেছে, ভোটারবিহীন ভোটকে অংশগ্রহণমূলক করেছে। হাসিনার প্রেতাত্বারাই বহাল তবিয়তে চেয়ারে বসে আছে। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও শেখ হাসিনা এগুলোকে কজায় নিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। দুদককে দায়িত্বই দেওয়া হয়েছিল বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমান, উনার সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমানসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে খড়গ চালিয়ে যাওয়ার জন্য। আপনারা জানেন, ওয়ান ইলেভেন থেকে এই দুদকে বিএনপির ওপর নির্দয় নিপীড়নের যন্ত্র হিসাবে সরকারী কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল, খুরশিদ আলম খানসহ আইনাঙ্গনের মাফিয়াদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছিলো। সেই মাফিয়ারা এখনো আদালত প্রাঙ্গনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র, উন্নয়ন সমৃদ্ধির ধারক ও বাহক জিয়া পরিবারকে কারারুদ্ধ করা, হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশী সাজার কারিগর দুদকের এই কাজল, খুরশিদ গং।

তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের ধারাবাহিক এক্সটেনসন অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকারের গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার নির্দেশনা মতো বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপি নেতাদের নামে বহু কাল্পনিক মামলা আবিষ্কার করে তাতে গনভবনের রায় পাঠ করে সাজা দেয়া হয়েছে। কাজল এবং খুরশিদরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ক্যাংগারু আদালতে প্রকাশ্যে অপমানজনক কথা বলতো। হুমকী দিতো। দেশনায়ক তারেক রহমান সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আজকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থার জন্য দায়ী পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল ও দুদকের আওয়ামী লীগের দালাল প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। এই সাবেক ছাত্রলীগের ক্যাডার ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে দেশনেত্রীকে বছর পর বছর কারাগারের স্যাতস্যাতে অন্ধকার প্রকোস্টে বিনা চিকিৎসায় আবদ্ধ রেখেছিলেন। কাজল-খুরশিদ দুর্বৃত্ত চক্র দেশনায়ক তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফরমায়েশী সাজা দিয়েছে। এই দূর্বৃত্ত চক্র বিএনপিসহ বিরেধী দল মতের বহু মানুষের জীবন তছনছ করে দিয়েছে। দুদকের মতো একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে হাসিনা কাজল-খুরশিদ গ্যাংঙের মতো ছাত্রলীগের ক্যাডার দিয়ে সম্পূর্ণভাবে লীগের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল। মোশাররফ হোসেন কাজল ছিলেন ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মিরপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। অবিলম্বে আমরা কাজল-খুরশিদ দুর্বৃত্তচক্রকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শান্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, মীর সরাফত আলী সপু, আসাদুল করিম শাহীন, এম এ মালেক, কাজী আবুল বাশার, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com