বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই সরকার যখন দেশকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, দেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। এটি সফল হবে না।
শনিবার (২৫ আগস্ট) বিকেল ৩টায় সিলেটের একটি হোটেলে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে সিলেটে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, অতীতের সকল জঞ্জাল পরিষ্কার করে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। এজন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে সংষ্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই, তবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মাত্র তিন মাসে সকল জঞ্জাল দুর করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে দেশের একটি অংশ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে এমন আকষ্মিক বন্যা আমরা দেখিনি। ভারত তাদের বাঁধ খুলে দেয়ায় এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা বাঁধ খুলে দেয়ার আগে কোন পূর্বাভাসও দেয় নি। উজানের পানির বেশীরভাগই ভারত থেকে আসে। অভিন্ন নদী সমূহের পানি বণ্টনের কোন সূরাহা আজও হয় নি। পানি আগ্রাসনকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সিলেট থেকে এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। এম. ইলিয়াস আলী এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তাকে গুম করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত তারা জনসমর্থনহীন ভাবে ক্ষমতায় ছিল, যার ফলে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা শুরু করেছিল। এবারও তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু দেশের সাধারণ ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে তা বাস্তবায়ন করতে পারে নি। মানুষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে মুখ খুলে কথা বলতে পারত না। সাংবাদিকরা ও গণমাধ্যমে এই আইনে দমন করা হতো। এখন মানুষ বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাতিল করে দেব।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবে সিলেটের সাংবাদিক আবু তুরাব সহ অসংখ্য মানুষ পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১২ সাল থেকে আমরা এই সংগ্রাম করছি। সেই থেকে আমাদের প্রায় প্রায় ৭০০ জন গুম করা হয়েছে, প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়েছে, এসব মামলায় বিএনপির ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনের মধ্যদিয়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন, তিনি কখনো মাথানত করেন নি। আমাদের তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা আইনিভাবে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছি। আমরা এম. ইলিয়াস আলী সহ গুম হওয়া সকলকে নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন, জাতিসংঘের একটি তদন্ত দলও এসেছে। আমরা এখনে আশাবাদী আমরা সঠিক তথ্য পাব। সরকারও সুনির্দিষ্টভাবে এখনো কিছু বলেনি। আমরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানতে চাই।