আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের মতবিরোধ থাকলেও সরকার পতন আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
শুক্রবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে যুগপৎ আন্দোলনের ৩১ দফা ও এক দফা ঘোষণার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
মান্না বলেন, আমরা যেসব রাজনৈতিক দল সরকার বিরোধী আন্দোলন করছি তাদের মধ্যে মতবিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু আমাদের সবাই মিলে একটি কাজই করতে হবে, এই সরকারের পতন। আমরা যদি অতীত দেখি, তাহলে দেখা যাবে আমরা কেউ কেউ আলাদা হয়ে গেছি। কিন্তু আমাদের বরং আরো বেশি যুক্ত হতে হবে। অন্যদেরও যুক্ত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা এখন এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি যেখানে আমাদের পেছনে 15 বছর আছে। এই 15 বছরে আমাদের সাফল্য কতটুকু ব্যর্থতা কতটুকু সেটা ভাবতে হবে। আমাদেরকে আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে হবে। প্রয়োজনে এই কোটা সংস্কারের দাবিও আমাদের 31 দফার মধ্যে আনতে হবে, যাতে আমরা ছাত্রদেরও আমাদের আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি এবং বড় আন্দোলনের পথে পা বাড়াতে পারি। সবাই মিলে লড়াইটা করতে হবে।
তিনি বলেন, মানুষ তখনই লড়াই করতে আসে, যখন সে মনে করে এই লড়াই তাকে কিছু দেবে। এই যে ছাত্ররা হুলুস্থুল করে দিয়েছে। এমন হুলুস্থুল আমরাও তো করতে পারিনি। কালকে যখন পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করেছে, এই ব্যারিকেড যে ভাঙা যাবে এই কথাও আমরা ভাবতে পারিনি। আমাকে অন্তত তিনজন ফোন করে বলল, দেখেন কিভাবে ছাত্ররা ব্যারিকেড ভাঙছে। পুলিশ প্রচন্ড নির্যাতন করেছে কুমিল্লাতে, হামলা করেছে চট্টগ্রামে, বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড দিয়েছে, ছাত্রলীগ পাল্টা মিছিল করেছে। তারপরও ছাত্ররা জানবাজি রেখে লড়াই করেছে, পুলিশ পরাজিত হয়েছে। এই ছাত্রদের মুখে আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি, সেই সংস্কারের দাবি নেই। ওই ছাত্রদের কর্মসূচির মধ্যে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবি নেই। কেন নেই বলেন তো? ওরা ছাত্র রাজনীতি জাতীয় রাজনীতি থেকে আলাদা দেখতে চায়?
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সহ-সভাপতি তানিয়া রব, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।