দেশজুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে বিপর্যস্ত জনজীবন। প্রায় প্রতিদিন হিট স্ট্রোকে কেউ না কেউ মারা যাচ্ছেন। গরমের তীব্রতায় ছোট থেকে বয়স্ক সকলের অবস্থা কাহিল। বৃষ্টির জন্য তীর্থের কাকের মতন অনেকেই অপেক্ষা করছেন। প্রচণ্ড গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে তাই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বাইরে বের হলে ছাতা, রোদ চশমা ও পর্যাপ্ত পানি সঙ্গে রাখা দরকার। এতে গরমের তীব্রতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।
অত্যধিক গরমে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই এই সময় শরীর পানিশূন্যতা হ্রাস করবে এমন খাবার খাওয়া প্রয়োজন। গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ফলের রসের জুড়ি নেই। তরমুজ ও বাঙ্গি, উভয়ই পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল, যা এই গরমে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং তীব্র গরম থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। তবে, এই দুইয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
তরমুজ:
গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল তরমুজ। তরমুজের প্রায় ৯২ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত। এটি ভিটামিন এ ও সি সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধকারী এবং শরীরে পানির সাম্যতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। তরমুজে লাইকোপিনও রয়েছে, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি রোগ থেকে রক্ষা করতে এবং আপনার ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। কোলাজেন আমাদের ত্বকের সংকোচন রোধ করে। তরমুজ আমাদের ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধি করে।
তরমুজ ও খেজুর এক সঙ্গে খেলে শরীরে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। ছোট–বড় সব বয়সের মানুষের জন্য তরমুজ খুবই উপকারী ফল। এই ফলে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় শরীরের অম্ল–ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখে, দূর করে ক্লান্তিভাব। তরমুজ অন্যান্য ফলের সঙ্গে সালাদে যোগ করা যেতে পারে বা সতেজ খাবারের জন্য স্মুদিতে মিশ্রিত করা যেতে পারে। তবে অনেকগুলো তরমুজের টুকরো একসাথে না খাওয়াই বাঞ্ছনীয় । এই ফল ফ্রিজে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা অনুচিত।
বাঙ্গি:
গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফলের মধ্যে অন্যতম একটি দেশি ফল বাঙ্গি। তরমুজের তুলনায় বাঙ্গির স্বাদ কিছুটা আলাদা, এর স্বাদ হালকা, সূক্ষ্মভাবে মিষ্টি। বাঙ্গি স্বাস্থ্যকর একটি ফল। এটি স্বতন্ত্র স্বাদের। তরমুজের মতো, বাঙ্গি তীব্র তাপদাহে খেতে পারেন। এ ফল সালাদের সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন বা জুস আকারেও পান করতে পারেন। বাঙ্গিতে পানির পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশ। বাঙ্গি ভিটামিন এ ও সি, সেই সঙ্গে পটাসিয়ামের চমৎকার উৎস, যা শরীরের পিএইচ ও তরল ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বাঙ্গি উপকারী। বাঙ্গিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
লেখক: পুষ্টিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ