ইবি: কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ রায়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন।
রায়ের পর সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় অপরাধীদের প্রতিশোধের ভয়ে আরও আতঙ্কিত জানিয়ে ফুলপরী বলেন, ‘পাঁচজন আমাকে যে নির্যাতন করেছে তার শাস্তি ১ বছরের জন্য বহিষ্কার; কখনোই হতে পারে না। এতে আমি সন্তুষ্ট না বরং আরও বেশি আতঙ্কিত।’
ফুলপরী বলেন, ‘তারা (পাঁচ অপরাধী) এক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে এই ঘটনার প্রতিশোধ নেবে না কিংবা এমন কাজ পরবর্তীতে করবে না, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমার ধারণা তারা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে, আবারও এমন কাজ (নির্যাতন) করবে।’
পাঁচ অপরাধীকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার যে দাবি; তাদের স্থায়ী বহিষ্কার, সেটাই আমি চাই। সেটা আমার দাবি ছিল ও রয়ে গেছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না। আমি মনে করি তাদের সঠিক বিচার হয়নি।’
এর আগে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের ২০২ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট, ১৯৮৭ এর অধ্যায় ২ ধারা ৮ অনুযায়ী অভিযুক্তদের ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে আমাদের ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে ওই ঘটনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছে। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্ত আদালতে পাঠাবো।’
বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের সানজিদা অন্তরা চৌধুরী, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ওই ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ১৪ ফেব্রয়ারি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে তা দেশজুড়ে আলোচিত হয়। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট থেকে পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।