ঢাকা : রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে সব ধরনের অস্ত্রোপচার (অপারেশন) বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে হাসপাতালটির চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহা কোনো ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি হাসপাতালটিতে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় নবজাতকের মৃত্যু ও মাহবুবা রহমান আঁখি নামে এক প্রসূতিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক গঠিত পরিদর্শন টিম হাসপাতালটি পরিদর্শন শেষে মোট ৬টি নির্দেশনা দেয়।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের একটি দল সেন্ট্রাল হাসপাতাল পরিদর্শন করে বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার উপ-পরিচালক মাঈনুল আহসান এ ৬ নির্দেশনার কথা জানান।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- ডা. সংযুক্তা সাহা পরবর্তী লিখিত অনুমোদন ছাড়া সেন্ট্রাল হাসপাপাতালে কোন বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না। আই. সি. ইউ ও জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ার অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম পরবর্তী নিদেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। মাহবুবা রহমান আঁখির পরিবারের নিকট হইতে গৃহীত চিকিৎসা বাবদ সকল খরচ এবং চিকিৎসাজনিত জটিলতার যাবতীয় খরচ সেট্রাল হাসপাতাল পক্ষকেই বহন করতে হবে। বর্ণিত রোগীর চিবিৎসায় জড়িত সকল চিকিৎসকের এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যাতীয় কাগজপত্র বিএমডিসি তে পাঠাতে হবে। বিএমডিসি হতে চিকিৎসকের নিবন্ধন বিষয়ক সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তদানুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ভুক্তভোগী কোন ক্ষতিপূরণ দাবি করলে বিদ্যমান আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করতে হবে। আদালতে চলমান মামলায় অভিযুক্ত ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনার যাবতীয় খরচ সেন্ট্রাল হাসপাপাতালকে বহন করতে হবে।
জানা গেছে, মাহবুবা রহমান আঁখি নামে ২৫ বছর বয়সী এক প্রসূতি সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক সংযুক্তা সাহার ভিডিও পরামর্শ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নরমাল ডেলিভারির আশায় সেন্ট্রাল হাসপাতালে যান। হাসপাতালে তাকে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সে সময় দেশেই ছিলেন না ডা. সংযুক্তা। অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। পরে অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। কিন্তু জন্মের পরদিনই শিশুটি মারা যায়। বর্তমানে প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখির অবস্থাও সংকটাপন্ন। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে।
ওই ঘটনায় আঁখির স্বামী মুহাম্মদ ইয়াকুব আলী বুধবার রাতে ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন। সেখানে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই রাতেই ডা. মুনা ও ডা. শাহজাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করলে তারা দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। মামলার বাকি আসামিরা হলেন- ডা. মিলি, ডা. এহসান, অধ্যাপক সংযুক্তা সাহার সহকারী জমির এবং হাসপাতালের ব্যবস্থাপক পারভেজ।