আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছরের শুরুতেই গুজরাট দাঙ্গায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি বানিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল ব্রিটেনের বিবিসি। ওই ডকুমেন্টারি আবার ভারতে ‘নিষিদ্ধ’ করেছিল ভারতের বিজেপি সরকার। ওই বিতর্কের স্মৃতি এখনো পুরোপুরি মুছে যায়নি মানুষের মন থেকে। এরই মধ্যে ফের একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ডকুমেন্টারি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় মুসলিমদের নিয়ে সম্প্রতি একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। এই সংবাদমাধ্যমের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনে এবার বাধা দিলো এলাহাবাদ হাই কোর্ট। ভারতের মুসলিমদের ‘দুর্দশা’ নিয়ে বানানো এই ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের বিরোধিতায় একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল উচ্চ আদালতে। সেই মামলার প্রেক্ষাপটেই আপাতত এই ডকুমেন্টারি প্রদর্শন মানা করেছে আদালত। দায়ের করা মামলার শুনানি পর্যন্ত এই ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি থাকবে। যদিও ডকুমেন্টারিটাকে সরাসরি ‘নিষিদ্ধ’ করেনি আদালত।
জানা গেছে, আল-জাজিরার ডকুমেন্টারিটার নাম – ‘ইন্ডিয়া… হু লিট দ্য ফিউজ?’ এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি অশ্বিনী কুমার মিশ্র এবং বিচারপতি অশুতোষ শ্রীবাস্তবের পর্যবেক্ষণ, এই ডকুমেন্টারিটা দেখানো হলে তার ‘ফল ভালো হবে না’। এই আবহে সরকারকে এই ডকুমেন্টারির বিষয়বস্তু খতিয়ে দেখতে বলেছে হাইকোর্ট। এই তার আগে যাতে এই তথ্যচিত্রটি কোনোভাবেই ভারতে প্রদর্শিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ভারতের সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, আল-জাজিরার ‘ইন্ডিয়া… হু লিট দ্য ফিউজ?’ নামক তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনী আটকাতে জনস্বার্থ মামলা করেন সুধীর কুমার নামক এক ‘সমাজসেবক’। তার যুক্তি, এই তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হলে দেশের দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির আবহাওয়া নষ্ট হবে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হবে। তাছাড়া এই ডকুমেন্টারির জেরে দেশ অশান্তি ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মামলাকারী।
নিজের আবেদনে মামলাকারী দাবি করেছেন, তিনি বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছেন যে ডকুমেন্টারিতে ভারতের মুসলিমদের অবস্থা দেখানো হয়েছে। তথ্যচিত্রে নাকি দাবি করা হয়েছে ভারতে মুসলিমরা আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। তবে মামলাকারীর দাবি, তথ্যচিত্রে দেখানো বিষয়বল্তুর সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই।
এদিকে এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফের আইনজীবী মামলাকারীর বিরোধিতা করেননি। এদিকে মামলাকারী দাবি করেন, এই তথ্যচিত্রটি ভারতে দেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন বা সার্টিফিকেট নেয়নি আল-জাজিরা। মামলাকারীর এই দাবি মেনে নেয় সরকারপক্ষের আইনজীবী।
এদিকে মামলার শুনানিতে আল-জাজিরার পক্ষ থেকে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিল না। এই আবহে আবেদনকারীকে আদালত নির্দেশ দেয়, যাত তিনি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আল-জাজিরাকে নোটিশ পাঠিয়ে এই মামলার পক্ষ হতে বলেন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস