ঢাকা: জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত আয়কর বিল ২০২৩ -এ কর কর্মকর্তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ। এর মাধ্যমে কর খাতে দুর্নীতি বহুগুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকরা হয়রানির শিকার হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে তা বাতিলের দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, কিছু অসাধু কর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে সাধারণ নাগরিকরা করের বেড়াজালে পড়তে চায় না। যার ফলে রাষ্ট্র আয়কর থেকে বঞ্চিত হয়। অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির মাত্রা এতটাই বেশি যে, রাষ্ট্র যে পরিমাণ আয়কর পেয়ে থাকে তার চাইতে বেশি পরিমাণ দুর্নীতি হয়।
উত্থাপিত বিলের অসঙ্গতি তুলে ধরে তিনি বলেন, এই বিলে কর কর্মকর্তাদের নাজেহালের কারণে কোনো সাধারণ মানুষ কর কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করতে পারবে না। আবার কর কর্মকর্তা চাইলেই ঘরের দরজা ভেঙে কিংবা ঘরের আলমারি, সিন্দুক ভেঙে তার অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। এ ধরনের কার্যক্রমে কোনো নাগরিক তাকে বাধা দিতে পারবে না। কর ফাঁকি কিংবা অভিযোগের ভিত্তিতে তারা সর্বোচ্চ পাঁচ বছরে সাজা দিতে পারবে। এমনকি করদাতার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীকে সেই বকেয়া কর পরিশোধ করতে বাধ্য করতে পারবে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে কর কর্মকর্তাদের।
এই বিলের উদ্বেগ প্রকাশ করে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ধরনের দায়মুক্তি এবং অতিরিক্ত ক্ষমতা অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরও বেপরোয়া করে তুলবে। দুর্নীতি কমার বদলে আরও বহু মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে। সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব খুব একটা আদায় করতে না পারলেও অতিরিক্ত সুবিধা পাবে কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী। পাশাপাশি কিছু অসাধু কর আইনজীবী লাভবান হলেও সাধারণ নাগরিকদের হেনস্তা এবং হয়রানির শিকার হতে হবে বহু মাত্রায়।
এ অবস্থায় বিল উপস্থাপনার আগে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে সংসদে উপস্থাপন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সাধারণ নাগরিক সমাজ। একইসঙ্গে এ বিল যেন কোনোভাবেই সংসদের পাস না হয় সে বিষয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সংগঠনটি।