ঢাকা: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ঢাকায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতির মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ঢাকায় দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই এ ফোনালাপ হলো। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ঢাকা দূতাবাস দেয় বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহরিয়ার আলম ও শেরম্যান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পারস্পরিক অগ্রাধিকারের বিষয়ে আলোচনা করেন। তারা কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশনের প্রতি পারস্পরিক অঙ্গীকারের বিষয়ে কথা বলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতরা বরাবরের মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পেতে থাকবেন।
শাহরিয়ার আলম উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রদূতদের কোনো পাবলিক বিবৃতি দেয়ার আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বুঝতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফোনালাপে শারম্যান তার বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেন এবং সাম্প্রতিক ইউএনএইচআরসি নির্বাচনে বাংলাদেশের বিজয়ে প্রতিমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। আন্তর্জাতিক ফোরামে একে অপরকে সমর্থন করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
প্রেক্ষাপট
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে। সেদিন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১৩ বছর আগে নিখোঁজ বিএনপি এক নেতার বাসায় যান। বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে পিটার হাসের বাংলাদেশে বিভাজনের রাজনীতিতে প্রবেশ হিসেবে দেখছেন।
এ সফরের সময় সেখানে পিটার হাসের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান জিয়াউর রহমানের আমলে সশস্ত্র বাহিনীতে হত্যা ও নিখোঁজের শিকার পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’র সদস্যরা। এতে পিটার হাস সেখানে তার অবস্থান সংক্ষিপ্ত করেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিবরণ দিয়ে নিরাপত্তার শঙ্কার কথা জানান।
পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে তলব করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট। জানানো হয় ঢাকায় পিটার হাসের নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও রাষ্ট্রদূত ঢাকার অবস্থান ও সেদিনকার ঘটনার ব্যাখ্যা দেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার ঢাকার রুশ দূতাবাস তাদের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে জানায়, ‘রাশিয়া অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের মতো যে দেশগুলো বিদেশি শক্তির নেতৃত্ব অনুসরণ না করে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতি গ্রহণ করে, সে দেশগুলোর প্রতি রাশিয়া পুরোপুরি সমর্থন জানায়।’
রুশ দূতাবাসের এ বিবৃতি প্রকাশের পরদিন পাল্টা অবস্থান প্রকাশ করে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। এক টুইটবার্তায় দূতাবাস ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের প্রসঙ্গ টেনে আনে।
রাশিয়ার ওই বিবৃতি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন শেয়ার করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের টুইটবার্তায় লেখা হয়, ‘ইউক্রেনের ক্ষেত্রে কি এই নীতি মানা হয়েছে?