ঢাকা : প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় তরুণ-তরুণীর। পরে দেখা করার প্রস্তাব; তরুণীর কাছে এমন সাড়া পেয়ে রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরে ছুটে আসেন তরুণ।
সেখান থেকে ওই এলাকার একটি হোটেলের রুমে যান দুজন। পরে আরও তিন তরুণ সেখানে আসেন। তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে আসা তরুণকে করেন অপহরণ। এ ঘটনার পর ওই তরুণী ও তার তিন বন্ধুকে আটক করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী তরুণের নাম সোহাগ। তাকে যারা অপহরণ করতে চেয়েছিলেন তারা হলেন- লুৎফুন নাহার তন্বী, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. মাসুদ রানা ও মো. স্বপন। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) এসব তথ্য জানায় পুলিশ।
জানা গেছে, ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও অপহরণ চেষ্টা জড়িতদের আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) মিরপুর মডেল থানা সদস্যরা। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। অপহরণ কাজে ব্যবহৃত সিএনজিও জব্দ করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় আসামিদের ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে নার্সিং কলেজের ছাত্র সোহাগের সঙ্গে পরিচয় হয় তন্বীর। নিজেকে সোহাগের কাছে মাস্টার্স পাশ একজন অবিবাহিত তরুণী হিসেবে পরিচয় দেন তন্বী। পরবর্তীতে মোবাইলে মাধ্যমে দুজনের কথাবার্তা চলে দীর্ঘদিন।
সোমবার (১৮ জুলাই) সোহাগকে কল করে মিরপুর-১ নম্বর ফুট ওভার ব্রিজের নিচে দেখা করতে বলেন তন্বী। বুধবার (২০ জুলাই) সকালে সোহাগ সেখানে আসার পর তারা রোজ ভিউ আবাসিক নামে একটি হোটেলে যান। সেখানে একটি রুম নেন। পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তন্বী হোটেলে বসে শফিকুল, মাসুদ ও স্বপনকে ক্ষুদেবার্তা পাঠান। তারা ওই রুমে আসার পর শফিকুল নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সোহাগের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেন।
একপর্যায়ে তন্বী কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। পরে শফিকুল, মাসুদ ও স্বপন সোহাগকে সিআইডি অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সামনে থেকে একটি সিএনজি ভাড়া করেন। তারা সিএনজিতে সোহাগের হাত ও মুখ চেপে ধরে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে সিএনজিটি টেকনিক্যাল মোড় আসার পর পুলিশের গাড়ি দেখে সোহাগ চিৎকার শুরু করেন।
ওসি আরও জানান, সোহাগ চিৎকার শুনে টহল পুলিশ ধাওয়া করে পাইকপাড়া ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে থেকে সিএনজিটিকে আটক করে। পরে সোহাগকে উদ্ধার ও বাকি তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে তন্বীকে মিরপুর ১ থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় আসামিদের ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।