দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২

স্পোর্টস ডেস্ক : ‘আমি উড়ে যেতে চাই ডানা মেলে’- পেসার তাসকিন আহেমেদের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছেন সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফীস। সে ছবিতে দুই হাত প্রসারিত করে নিজের ‘ট্রেডমার্ক’ সেলিব্রেশন করছেন তাসকিন। যেন উড়ে যেতে চাইছেন। তাসকিনের মতো করেই আজ উড়ছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ দলকে আটকানোর সাধ্য কার?

এই তো কদিন আগেই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে রীতিমত নাকানিচুবানি খেয়ে ফেরে। সিরিজ হারে ০-৩ ব্যবধানে। এবার সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে বাজিমাত বাংলাদেশের। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচ ৯ উইকেটে জিতে প্রথমবারের মতো সে দেশে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। এই সফরের প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ ৩৮ রানে জয়ের আগে কজনই বা ভেবেছিল এমনও হতে পারে!

সেঞ্চুরিয়ানে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর অবশ্য জোহানেসবার্গে দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে যায় বাংলাদেশ। বুধবার সিরিজ নির্ধারণী অলিখিত ফাইনালে বাজিমাত তামিম ইকবালের দলের। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে তাসকিনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ১৫৪ রানেই গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। ১৫৫ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে তামিমের ফিফটি আর লিটন দাসের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেট আর ১৪১ বল হাতে রেখে বিশাল জয় পেয়েছে টাইগাররা। সঙ্গে সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ১০ পয়েন্ট যোগ হয়েছে বাংলাদেশের নামে।

তাসকিনের ৫ উইকেটের পর প্রতিপক্ষকে ১৫৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে যে আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করে বাংলাদেশ, সে আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার সফরকারী বোলাররা। অনেক সময় লো স্কোরিং ম্যাচ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তালগোল পাকিয়ে ম্যাচ হেরে বসে পরে ব্যাট করা দল। এই সফরের আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ তো দূর, কোনো ম্যাচ না জেতা বাংলাদেশ যে সেটি করতে পারে, সেই শঙ্কা জমাট বেঁধেছিল। তবে তামিম-লিটনের ‘নির্ভার’ ব্যাটিং সব শঙ্কা তুড়িতে উড়িয়ে দিয়েছে।

যদিও বিপদটা হতে পারতো শুরুতেই। রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই উইকেট হারাতে বসেছিল বাংলাদেশ। ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন লিটন। কাগিসো রাবাদার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পয়েন্টে বল মুঠোয় জমাতে পারেননি কেশভ মহারাজ। তখন শূন্য রানে ব্যাট করছিলেন লিটন। সেই লিটন পরে ফিরেছেন আক্ষেপ সঙ্গী করে, ৪৮ রানে। ২ রানের জন্য অর্ধশতক করতে পারেননি এই ডানহাতি।

লিটন না পারলেও ফিফটি তুলে নেন তামিম। স্ট্রাইক রেটের জন্য সমালোচিত বাঁহাতি ওপেনার আজ হাত খুলে খেলেছেন। দলীয় রান যখন ৭৩, তখন ব্যক্তিগত ফিফটি তামিমের। সেটিও আসে মাত্র ৫২ বলে, ৯টি চারের মারে। তামিমের মতো লিটনও ছুঁটছিলেন ফিফটির দিকে। তবে ইনিংসের ২১তম ওভারে মাহারাজের বলে আউট হন তিনি। ফেরার আগে ৫৭ বলের ইনিংসটি সাজান ৮টি চার দিয়ে। দুই জনের ১২৭ রানের ওপেনিং জুটির পর সাকিবকে নিয়ে জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন তামিম।

৯ উইকেটে পাওয়া জয়ের পরেও খানিক আফসোসে করার জায়গা আছে তামিমের। প্রতিপক্ষ আর কিছু রান করলে সেঞ্চুরিটা পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে এমন ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের কাছে এমন আফসোস ধোপে টেকার কথা নয়। ৯ উইকেট আর ১৪১ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে তামিম অপরাজিত থাকেন ৮২ বলে ৮৭ রানে। যেখানে কোনো ছয় না মারলেও বাউন্ডারি মারেন ১৪টি। সঙ্গে ২০ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব আল হাসান।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শুরুটা হয় বেশ দাপুটে। সেঞ্চুরিয়ানে কুইন্টন ডি ককের পরিসংখ্যান বেশ সমৃদ্ধ। আজ তাকে একপাশে রেখে ইনিংস শুরু করতে নেমে আগ্রাসী ছিল ইয়ানেমান মালামের ব্যাট। ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারেই স্কোর বোর্ডে ৪০ রান। এই জুটি যখন ধীরে ধীরে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন দৃশ্যপটে মেহেদী হাসান মিরাজ। বিধ্বংসী হওয়ার আগে ফেরালেন ডি কককে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com