বাংলাদেশে মাদক চোরাচালান বন্ধে ভারতের চাপ আছে : রামপ্রসাদ

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বাংলাদেশে যেন ভারত থেকে কোনো মাদক না ঢোকে, সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ আছে এবং মাদক চোরাচালান বন্ধ না হলে এর নেতিবাচক প্রভাব ভারতেও পড়বে বলে জানিয়েছেন দেশটির ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল।

বুধবার (২ মার্চ) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে ঢাকা পোস্টকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান তিনি।

রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসেন মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে একই চেকপোস্ট দিয়ে তিনি দেশে ফিরে গেছেন।

ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে মাদক চোরাচালানের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল বলেন, মাদকের সমস্যাটি আজকের নয়। এটি বহু বছর আগে থেকেই চলছে। এটি বলতে আপত্তি নেই দুই দেশের (ভারত ও বাংলাদেশ) মধ্য থেকেই মাদকদ্রব্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে। কিছু আমাদের দেশ থেকে এ দেশে আসে, সেটি বাংলাদেশের প্রশ্ন; বাংলাদেশ থেকে হেরোইনের মতো দামি মাদক যায় আমাদের দেশে।

এসব মাদক আমাদের দেশে যখন ধরা পড়ে, তখন আমরা দেখি এর উৎস বাংলাদেশ। দুই দেশের মধ্যেই এ ধরনের লোক আছে, যারা এ কাজগুলো করছে। বাংলাদেশ সরকার এটি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে, সেটি আমি জানি না। তবে আমাদের দেশে এটি আমরা খুব কড়াভাবে দমন করার কাজ করি।

কেন্দ্র থেকে রাজ্য সরকারের ওপর মারাত্মক চাপ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে যেতে পারবে না। কারণ আমরা জানি, এই মাদক বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি করছে। সে জন্য ভারত সরকারও চিন্তিত। বাংলাদেশ যদি কোনো কারণে দুর্বল হয়ে পড়ে, যুবসমাজ যদি ধ্বংস হয়ে যায়; তাহলে তার প্রভাব আমাদের দেশের ওপরও আসবে। সে জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের মারাত্মক চাপে রাখেন। আমরাও আমাদের প্রশাসনিকভাবে যা কিছু করতে হয়, সেভাবে চেষ্টা করি। তারপরও কিছু ফাঁকফোকর দিয়ে হচ্ছে। আমরা উভয় দেশ মিলে যদি কাজ করি, তাহলে মাদক চোরাচালান থাকবে না।

সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চোরাচালান বিষয়টিকে আমাদের কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকার কোনো অবস্থাতেই সাধারণভাবে দেখি না। আমাদের বিএসএফ, পুলিশ প্রশাসন বা আইবি বিভাগ এ বিষয়টিকে যেভাবে যতটুকু নিয়ন্ত্রণ করার, সেটি আমরা করি। যারা মাদকদ্রব্যের লাইনে আছে, ত্রিপুরার মাটিতে তাদের স্থান নেই। এ মুহূর্তে তারা (চোরাকারবারি) ত্রিপুরার মাটিতে কোনো ধরনের সুযোগ পাচ্ছে না।

ত্রিপুরায় গাঁজা চাষ ও ফেনসিডিল কারখানা সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল বলেন, এখন ত্রিপুরা থেকে ফেনসিডিল আসে কি না, আমি জানি না। তবে এ ব্যবসা করার মতো সাহস এখন আর তাদের নেই। তাদের কোমর ভেঙে গেছে। ত্রিপুরার ৭৫ শতাংশ এলাকা গভীর জঙ্গলের মধ্যে। গাঁজা চাষের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার মালিক হবে, এই মানসিকতা নিয়ে লোভে পড়ে কেউ কেউ হয়তো গাঁজা চাষ করতে পারে। গাঁজা চাষ যে হয় না সেটি নয়, কিন্তু পুলিশ প্রশাসন সেগুলো ধ্বংস করে।

দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রক্তের সম্পর্ক। আমরা বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে চাই। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এখন সুসম্পর্ক আছে, আগামী দিনেও থাকবে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com