বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রায় দুই দশক পর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডনে দীর্ঘ নির্বাসনের পর এবার দেশে ফেরার কথা জানিয়েছেন তিনি নিজেই।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, ৫৯ বছর বয়সী তারেক রহমান—সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কার্যত দলটির প্রধান নেতা —২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
গত বছর দেশের ইতিহাসের অন্যতম বড় গণ-অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভারতের আশ্রয়ে চলে গেলে বাংলাদেশে সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক শূন্যতা। ওই সময় শেখ হাসিনার সমালোচক ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
আন্দোলনের সময় সহিংসতায় প্রায় ১,৪০০ মানুষ প্রাণ হারায়। এরপর আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে ঢাকায় বিচার শুরু হয়।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বলেন, “সময় এসেছে, ইনশাআল্লাহ, আমি শিগগিরই ফিরে আসব। হয়ত কিছু ব্যক্তিগত কারণে এখনও ফিরতে পারিনি। কিন্তু আমার মনে হয়, সময় এসেছে। এটি এমন একটি নির্বাচন, যার জন্য মানুষ অপেক্ষা করছিল। আমি এই সময় নিজেকে দূরে রাখতে পারব না।”
২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে অবস্থান করা তারেক রহমান তার অনুপস্থিতিতে একাধিক মামলায় দণ্ডিত হন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলা, যার ঘটনায় তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তারেক রহমান নিজেকে দোষী হিসেবে স্বীকার করেননি এবং আদালতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তারেক রহমানের মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। তার নির্বাচনি প্রচারে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নয় বিএনপি।
তারেক বলেন, “তিনি সুস্থ অবস্থায় জেলে গিয়েছিলেন এবং অসুস্থ অবস্থায় ফিরেছেন। তিনি যথাযথ চিকিৎসার অধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। তবে যদি তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়, তিনি অবশ্যই নির্বাচনে কোনো না কোনোভাবে ভূমিকা রাখবেন।”
বিএনপি আশাবাদী যে আসন্ন নির্বাচন তাদের জন্য বিজয় বয়ে আনবে এবং তারা দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে ফিরতে পারবে।