আজকের ব্যস্ত জীবনধারায় অনেকে রাত জাগা এবং পর্যাপ্ত ঘুম না নেওয়ার অভ্যাসে আছেন। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টার কম ঘুম নেওয়া শরীরের বিভিন্ন ফাংশনে প্রভাব ফেলে।
পর্যাপ্ত না ঘুমালে দেখা দিতে পারে এসব সমস্যা:
মনোযোগ ও মেজাজের সমস্যা: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায় না। ফলে সারাদিন ক্লান্তি, মনোযোগে দুর্বলতা, দ্রুত রাগ বা দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে। কাজের প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
স্মৃতিশক্তি ও শেখার ক্ষমতা কমে যাওয়া: ঘুম মস্তিষ্কের ‘মেমরি কনসোলিডেশন’ প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। ঘুম কম হলে নতুন তথ্য মনে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, এবং পুরনো স্মৃতিও দুর্বল হতে পারে
হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি: দীর্ঘমেয়াদে কম ঘুম হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ৬ ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের উচ্চ রক্তচাপ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে।
ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা: ঘুমের অভাবে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের হরমোনগুলোর ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলস্বরূপ বেশি ক্ষুধা, রাতের খাবারের প্রতি প্রবণতা বাড়ে, যা ওজন বৃদ্ধি করে।
দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়। এতে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে সংক্রমণ ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব: দীর্ঘদিন কম ঘুম নেওয়া অবসাদ, হতাশা এবং উদ্বেগের কারণ হতে পারে। ঘুম মস্তিষ্ককে মানসিক চাপ থেকে পুনরুজ্জীবিত করার সুযোগ দেয়, যা কম হলে মানসিক সমস্যা বাড়ে।
পর্যাপ্ত ঘুম শুধু শরীরকে শক্তিশালী রাখে না, মানসিক শান্তি ও কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। তাই ঘুমকে এড়িয়ে চলা নয়, বরং স্বাস্থ্যকর জীবনের অংশ হিসেবে গুরুত্ব দিন।