লিবিয়া থেকে জলপথে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হওয়া বরিশালের গৌরনদীর ৩৮ যুবকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমানে লিবিয়ায় কারাগারে রয়েছেন তারা।
পাচারকারী চক্রের এক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এজেন্টদের বরাত দিয়ে চক্রের সদস্য জাকির বলেন, “লিবিয়ার উপকূল বেনগাজী থেকে ওই ৩৮ জনকে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে। তাদের সঙ্গে আরো একটি নৌকার ৩২ জনকে আটক করা হয়েছে। মোট ৭০ জন বাংলাদেশি আটক রয়েছেন। যার মধ্যে ওই ৩৮ জন ছাড়া আরো ১১ জন গৌরনদীর বাসিন্দা রয়েছেন। আটকদের মধ্যে বেশিরভাগ গৌরনদীর বার্থী ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে লিবিয়ার কারাগারে থাকা অসংখ্য যুবকের স্বজনরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে বরিশালের গৌরনদীর বিভিন্ন গ্রামের ৩৮ জন যুবক চলতি বছরের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে ওমরা হজ ভিসায় প্রথমে সৌদি আরবে যান। সেখান থেকে তারা দালাল সিন্ডিকেটের এজেন্টদের মাধ্যমে চোরাই পথে লিবিয়া যান। পরে ৬ সেপ্টেম্বর তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সূত্রমতে, প্রত্যেক যুবক তাদের সহায় সম্বল বিক্রিসহ ধার-দেনা করে ১৫ লাখ টাকা করে তুলে দিয়েছেন দালাল সিন্ডিকেটের হাতে। তারা সবাই অবৈধভাবে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার জন্য এ টাকা দেন।
আটক এক যুবকের বিধবা মা নাজমা বেগম বলেন, “আমার ছেলে বলেছিল মা জীবনে অনেক কষ্ট করেছ, আর কষ্ট করতে হবে না। এখন আমার বুকের মানিক কোথায় আছে, কেমন আছে জানি না। অনেক কষ্ট করে সহায় সম্বল বিক্রি করে সে স্বপ্নপূরণ করতে চেয়েছিল।”
গৌরনদী থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, “ফেসবুকে বিষয়টি দেখেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”