বিএনপি-ই একমাত্র দল যারা দেশকে রক্ষা করতে পারবে: দুদু

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি বিএনপি-ই একমাত্র দল যারা দেশকে রক্ষা করতে পারবে। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জিয়া পরিষদ অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি এর উদ্যোগে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম ও ২৪ গণঅভ্যুত্থান শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দুদু বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দোসররা সীমাহীন লুটপাট করে ব্যাংক সেক্টরকে একেবারেই ধ্বংস করে ফেলেছে। সেই টাকা ফেরত আনবেন এই প্রতিশ্রুতি বর্তমান সরকার প্রধান দিয়েছিলেন। এখনো তিনি সে প্রতিশ্রুতির মধ্যেই আছেন এবং আমাদের একটা দৃঢ় বিশ্বাস আছে যেহেতু তিনি আরো চার, পাঁচ, ছয় মাস থাকবে তার যে ভাবমূর্তি মানে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের যে ভাবমূর্তি দেশে বিদেশে সবাই তো তাকে চেনে, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান তাকে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে তাদের দেশে নিয়ে যান, মানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন এটার জন্য নয়, আগে থেকে তিনি সম্মানিত ছিলেন। তাই আশা করি তিনি টাকা ফেরত আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমরা যদি দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে সেই সরকার তার কাজের অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা নিয়ে আসতে পারবে। এবং সেই সরকার পরীক্ষিত হবে। গত ১৫-১৬ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যে দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ জিয়া। এখন যিনি পরিচালনা করছেন এবং পরীক্ষিত নেতা তারেক রহমান তিনি যখন সরকার পরিচালনায় আসবেন তখন আমি নিশ্চিত এই টাকার বড় অংশই দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে।

বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, দেশে ভুয়া নির্বাচনের সূচনা, নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে। সেই সময় শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে বিরোধী প্রার্থীদের বিজয় কেড়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়। দুদুর অভিযোগ, শেখ হাসিনা সেই ধারাকেই অনুসরণ করে ২০০৮ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র মানেই সুষ্ঠু নির্বাচন। শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে সেই নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। গণহত্যা, ব্যাংক লুটপাট ও ভোটচুরির জন্য তার জবাবদিহি করতে হবে।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ধরে যা করেছে, আদতে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এবং মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান বিষয় ছিল স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র। আর গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে একটি ভালো নির্বাচন। সেই নির্বাচন সে করতে দেইনি, ভোট চুরি করেছে । তাই এই ভোট চুরির জন্যে, গণহত্যার জন্য, ব্যাংক ডাকাতির জন্য তার ফাঁসি হওয়া উচিত। সে দেশটা খোকলা বানিয়ে দিয়ে গেছে। তাই যেকোনো ভাবে তাকে দেশে ফেরত এনে তার বিচার করে, সাজা কার্যকর করতে হবে।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য বারবার নির্যাতন সহ্য করেছেন, অথচ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো কটূক্তি করেননি। একইভাবে তারেক রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজেকে পরীক্ষিত নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি বিএনপি-ই একমাত্র দল যারা দেশকে রক্ষা করতে পারে। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে।

ড. মো. ইউনূস এর উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ডক্টর ইউনূসের প্রথম কাজ ছিল সচিবালয় থেকে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে আওয়ামী দোসরদের পরিষ্কার করা। কারণ শিক্ষিত চোরকে বসিয়ে রেখে ভালো কাজ আশা করা যায় না। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ লাখ শিক্ষিত বেকার আছে, অনেক ডিগ্রিধারী শিক্ষিত সাংবাদিক আছে। তাদের বিশেষ ট্রেনিং দিয়ে ওইসব চেয়ারে বসালে দেশটা, দেশ প্রেমিকদের মত চালাত। আরো ভালো চলতো।

তিনি বলেন, লড়াইটা ছিল ১৭ বছরের, ফিনিশিং হয়েছে এক মাসে। যারা শেষ ফিনিশিং এ ছিল তাদের প্রতি একটা আশা ছিল। কিন্তু তারা নিজেরা নিজেরা ধ্বংস হয়ে গেল। তাদের থেকে দুই তিন জন নিয়ে উপদেষ্টা বানালো। এই তিনজনের নামেই যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম সময়ের মধ্যে এত লুটপাটের সরকারি পর্যায় থেকে আর কারোর বিরুদ্ধে উত্থাপন হয় নাই।

এই তরুণদের দলে একটা ছেলে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে যাকে দাড় করিয়ে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় লাভ করা যাবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা তারেক রহমানের সাথে থাকতে হবে। তাহলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে ওনারা আরো শক্তি পাবে। দেশকে রক্ষা করতে পারে বিএনপি সে প্রমাণ বিএনপি দিয়েছে। ভবিষ্যতেও এই দেশকে বিএনপি রক্ষা করতে পারবে। এটা আমি বিশ্বাস করি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. সুজাউদ্দৌলার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ মো. ওবায়দুল হক, অগ্রণী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনসহ প্রমুখ।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com