গাজায় এক দিনে ইসরাইলি হামলায় ৩২ ত্রাণপ্রার্থীসহ নিহত ৭৮

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে ইসরাইলি সেনারা নতুন করে অভিযান জোরদার করেছে। রোববার (৩১ আগস্ট) সারাদিন ধরে গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় শিশু ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৭৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩২ জন খাদ্য সহায়তার জন্য লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় প্রাণ হারান। খবর আল জাজিরার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণে জোরপূর্বক সরিয়ে দিতে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। রোববার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত শুধু গাজা উপত্যকাতেই প্রাণ হারান অন্তত ৭৮ জন। এর মধ্যে খাদ্য সংগ্রহে যাওয়া ৩২ জনও রয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানায়, ওই দিন ইসরাইলি গোলাবর্ষণে আল-কুদস হাসপাতালের পাশে স্থাপিত তাঁবুতে আগুন ধরে যায়। এছাড়া রিমাল এলাকায় এক আবাসিক ভবনে হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত ও তিনজন আহত হন।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা অভিযোগ করেন, ইসরাইলি সেনারা আবাসিক এলাকায় ‘বিস্ফোরক রোবট’ ব্যবহার করছে এবং মানুষকে জোর করে উচ্ছেদ করছে। তাঁর দাবি, গত তিন সপ্তাহে অন্তত ৮০টি বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তিনি এটিকে ‘ভূমি পোড়াও নীতি’ বলে আখ্যা দেন।

আল-থাওয়াবতা আরো বলেন, “ধ্বংসযজ্ঞ ও দুর্ভিক্ষ সত্ত্বেও গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলের ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।”

অন্যদিকে আল জাজিরা যাচাইকৃত এক ভিডিওতে দেখা যায়, সাবরা এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলার পর ঘন ধোঁয়া উড়ছে। আহত এক শিশুকে রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার করতে শোনা যায়, আরেকজন শিশু গুরুতর মাথার আঘাতে মাটিতে পড়ে আছে। আশপাশের ভবনগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

গত আগস্টের শুরু থেকেই গাজা সিটিতে অবিরাম গোলাবর্ষণ চালাচ্ছে ইসরাইল। গত শুক্রবার তারা শহরটিকে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ ঘোষণা করে নতুন আক্রমণের ঘোষণা দেয়।

আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, নিরবচ্ছিন্ন গোলাবর্ষণ ও বুলডোজারের মাধ্যমে আবাসিক এলাকা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরাইল। তার ভাষায়, “সেখানে প্রকৃত কোনো যুদ্ধ নেই, শুধু ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। মানুষ পালাতেও পারছে না, কারণ কোথাও নিরাপদ আশ্রয় নেই।”

এদিকে রোববার গাজা সিটিতে ইসরাইলি হামলায় আল-কুদস আল-ইয়াওম টিভির সাংবাদিক ইসলাম আবেদ নিহত হন। গাজার গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ২৪৭ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অন্য হিসাবে এই সংখ্যা ২৭০ জনেরও বেশি। সোমবার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় আরও অন্তত ২১ জন নিহত হন, তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন সাংবাদিক।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com