শিরোনাম
‘পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত’ আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার, বরখাস্ত ২ ভারতের ১৫ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের ‘তাপসের নেতৃত্বে বিডিআর হত্যাকাণ্ড, জড়িত নানক-মির্জা আজম’ বাসের ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্সের ৫ যাত্রী নিহত ভারত থেকে আসা ১২ ড্রোন ধ্বংস করার দাবি পাকিস্তানের ঘৃণা এবং সহিংসতা আমাদের শত্রু, একে অপরের নয়: ভারত-পাকিস্তানকে মালালা প্রায়ই সঙ্গীকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখছেন, এটা দুজনের সম্পর্কের যে ইঙ্গিত দেয় ভারতের হামলায় উচ্ছ্বসিত বলিউড, কী বলছেন পাকিস্তানি তারকারা পাকিস্তানে হামলায় ৭০ জন নিহত: ভারতীয় গণমাধ্যম

ফ্যাসিস্টরা আরও বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার হুমকি দিচ্ছে: রিজভী

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

হাসিনার দোসররা আসামি হয়েও আদালতে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে তা মূলত অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অকার্যকর’ প্রমাণের এক গভীর চক্রান্ত মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘হাজারো শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আরও বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার হুমকি দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ রক্তঝরা আন্দোলনের অব্যবহিত পর থেকে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির প্রত্যাশার প্রতিফলন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। হয়ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি থাকলেও গণতন্ত্রকে মজবুত কাঠামো তৈরির প্রস্তুতির অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। পতিত স্বৈরাচারের দোসর, খুনের আসামিরা প্রকাশ্যে আদালতে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিচার চেয়ে বক্তব্য রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনার গণহত্যাকারী বাহিনীর নেতারা দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ভয়াবহ অপশাসনের জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূরে থাক, উলটো আদালতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। হাজারো শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আরও বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার হুমকি দিচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার(২৪ এপ্রিল)দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘ভারতে পলাতক হাসিনা একের পর এক হুংকার দিচ্ছে। জুলাই-আগস্টের শাজাহান খান গংরা আদালতে এসে সরকারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আদালতকে ভেংচি কাটছে, পুলিশকে থোড়াই কেয়ার করছে। হাসিনার দোসররা আসামি হয়েও আদালতে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে তা মূলত অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অকার্যকর’ প্রমাণের এক গভীর চক্রান্ত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ প্রশাসন নীরবতায় তারা এমন আচরণ করছে।

গত ১৫ বছর বিভিন্ন পাতানো মামলায় বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা ও আলেম-ওলামাকে ডান্ডাবেড়ি-পরিয়ে আদালতে তোলা হয়েছিল আর এখন কারাগারে ভয়াবহ অপরাধী আওয়ামী নেতাদের জামাই আদরে আদালতে হাজির করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাসিনার অলিগার্করা ‘সর্ষের ভিতর ভূত’ হয়ে থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও পাড়া-মহল্লা, পথেঘাটে, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের কোনো কমতি নেই।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পলাতক কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের গলার স্বর শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। দেশের জনগণের পাচার করা টাকা পতিত স্বৈরাচারের ‘টনিক’ হিসেবে কাজ করছে। শেখ হাসিনার একটি ভরসা হচ্ছে পাচার করা টাকা, সেই টাকার জোরে দেশে নানা ঘটনা ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। একটি প্রবাদ আছে “টাকায় কথা কয়”-শেখ হাসিনা এই প্রবাদটি কাজে লাগাতে চাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাফিয়া অর্থনীতির জোরে শেখ হাসিনা দেশের যে সম্পদ পাচার করেছেন, সেই সম্পদের মুনাফা দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চান। পতিত ফ্যাসিবাদের বড় বড় দোসররা অনেকেই প্রশাসনের হেফাজতে ছিল, কিন্তু তারা কীভাবে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে? নিশ্চয়ই এখনও প্রশাসনের মধ্যে অনেকেই ঘাপটি মেরে আছেন, ফ্যাসিবাদের খুনি দোসরদের সহযোগীরা।’

রিজভী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে থাকা পতিত ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। তারা কোথাও কোথাও গণহত্যাকারীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তির সহযোগিতায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ঝটিকা মিছিল করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে, আঘাত করছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের, ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, শিল্পী-কুশলী, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ অনেকের বাড়ি-ঘর যেমন-ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের মানিকগঞ্জের বাড়ি আগুন দিয়ে ভষ্মীভূত করা হয়েছে।

কোন কোন পক্ষ আছেন যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান, তাদেরও নেপথ্যে ইন্ধন না থাকলে ফ্যাসিস্টের অনুচররা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দুঃসাহস দেখাতো না। সেই মাফিয়া অর্থনীতির সৃষ্টিকারীদের হোতারা আজও কেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে?’

তিনি বলেন, ‘যে সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে প্রলম্বিতকরার ঘোষণা দিয়ে কাজ করেছেন, তারা আজ বহাল তবিয়তে তাদের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী দুঃশাসনের ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচারের সাথে যুক্তরা আজও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। সুতরাং, হাট-বাজার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সেক্টরে ফ্যাসিস্টদের সিন্ডিকেট তৎপরতা বহাল তবিয়তে কাজ করে যাচ্ছে, এরাই দেশের মালিক সমিতি হিসেবে গণ্য।

যে কারণে-চালের দাম হু-হু করে বাড়ছে, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে। প্রশাসনের সর্বস্তরে এখনও দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদের দোসররা বিদ্যমান আছে, কারণ-তারাই সরকারের দু-একজনকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে নাকি স্ব-পদে বহাল রয়েছেন। এ ধরনের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রায়ই প্রকাশিত হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com