ঢালিউডের অনিন্দ্য সুন্দরী নায়িকা সাদিকা পারভিন পপি। একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই নায়িকা দীর্ঘ সময় ধরে অন্তরালে রয়েছেন। হঠাৎ করেই নিজেকে আড়াল করে নেন এই অভিনেত্রী।
প্রথম দিকে পপির এ অনুপস্থিতিকে স্বাভাবিক মনে করেছিলেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সময় যতই এগোতে থাকে ততই তাকে ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। নায়িকার আড়ালে যাওয়ার রহস্য খুঁজতে বেরিয়ে আসে তার গোপন সংসার ও সন্তান জন্মের খবর। বিয়ে করে এখন পুরোদস্তুর সংসারী পপি। শোবিজে নেই তার কারও সঙ্গে যোগাযোগ।
সম্প্রতি মা ও বোনের জেরে, থানায় জিডির খবর দিয়ে আবারও প্রকাশ্যে আসে পপি। জানালেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার কথা।
বিভিন্ন সময়ে পপি বলেছেন, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে একেবারেই কথা বলতে চান না। এবার আর রাখঢাক রাখেননি তিনি। বলা যায় এতদিনের চাপা কষ্ট, দুঃখ, যন্ত্রণা উগরে দিয়েছেন মিডিয়ার সামনে। বিয়ের সিদ্ধান্ত, মা-বোনদের সঙ্গে সম্পর্ক, সব কিছু নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন পপি।
পপির জানান, তার বিয়ের পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু ২০১৯ সালে বাসায় একটা ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ ঘটে। সেদিন অনেক বড় অঙ্কের টাকা চুরি হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় জিডি করেন। পরে তাকে রমনা থানায় ডাকা হয়।
পপি বলেন, সেদিন আদনানকেও ডাকি। থানায় গিয়ে দেখলাম, আমার ভাইবোনেরা। ঘটনা চক্রে জীবন নিয়ে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মনে হলো, আমি কারও কাছে নিরাপদ নই। ফিল্মের কাজে সবার সঙ্গে মিশেছি ঠিকই, কিন্তু আপনজন কেউ ছিল না। বরাবরই আমি পরিবার অন্তঃপ্রাণ মানুষ। অথচ এই আমার কাছে পরিবারের সবাই অচেনা হয়ে গেলো। সম্পত্তি ও টাকাপয়সা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। জটিলতার এই পুরো সময়ে আদনান আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছে। কোনো জটিলতাই আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, ওই সময়ে এমন একজন বন্ধুকে যদি না পেতাম, আমার জীবনটাই বিপন্ন হয়ে যেত। ২০২০ সালের দিকে আবার জটিলতা শুরু হয়। তখনো ভাবলাম, আমাকে মা-বোনেরা বাঁচতে দেবে না। বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। যোগাযোগ করি আদনানের সঙ্গে। এরপর আমার জায়গাজমির দলিল, ব্যাংকের কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। বলতে পারেন, রীতিমতো জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। তখন আমার সামনে দুটি পথ খোলা, হয় আত্মহত্যা করতে হতো, নয়তো ওদের হাতে খুন হয়ে যেতে হতো।
স্বামী আদনানই তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন বলে জানান পপি। তিনি এও জানান, এই পরিস্থিতিতে তিনি বিয়ে করতে বাধ্য হন।
পপির ভাষ্যে, ২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ে করি বাসায় কাজি ডেকে। আমার আত্মীয়স্বজন ছিলেন। এটা সত্য, বিয়েতে আমার মাকে ডাকিনি। হয়তো এটা বিশ্বাস করবে না কেউ, কিন্তু এটাই সত্য, আমার মা চাইতো না আমি বিয়ে করে সংসারী হই।
সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর সালমান-শাবনূর জুটি ভেঙে যায়। সেসময় শাকিল খান-পপির জুটি তুমুল হিট হয়। একের পর এক তারা দিয়েছেন ব্যবসাসফল সিনেমা। সেই সুবাদে পপি ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে একজন শক্তিশালী অভিনেত্রীর তকমাও পেয়ে যান।
একটা সময় শাকিল খানের সঙ্গে গভীর প্রেমের কথাও চাউর হয় মিডিয়াপাড়ায়। এমনকি শাকিল খান দাবি করে বসেন, তিনি পপিকে বিয়ে করেছেন।
পপি অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করেছেন সবসময়। সেখান থেকেই ভেঙে যায় শাকিল-পপি জুটি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। কিন্তু তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কুলি’। এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানী। সিনেমাটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবসা করে মাইলফলক করে। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।