এবার কোভ্যাক্সিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া! যেসব উপসর্গ দেখা দিচ্ছে

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

অ্যাস্ট্রাজেনেকার পর এবার প্রশ্নের মুখে ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, যারা কোভ্যাক্সিন নিয়েছিলেন, তাদের এক তৃতীয়াংশেরই এক বছর পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে চর্মরোগ ও রক্ত জমাট বাধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে কোভ্যাক্সিনে।

সম্প্রতিই এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড ভ্যাক্সিনে বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে। ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গেই তৈরি করেছিল এই ভ্যাক্সিনটি। অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ার পরই যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছিলেন, তারা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে ভুগছিলেন। তখন স্বস্তিতে ছিলেন যারা কোভ্যাক্সিন নিয়েছিলেন। এবার কোভ্যাক্সিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা গেল।

স্প্রিঙ্গলার লিঙ্ক নামক একটি প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত গবেষণাতেই বলা হয়েছে, ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে কিশোরীদের মধ্যে, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে?

জানা গেছে, ভারতের বেনারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। মোট ১ হাজার ২৪ জন এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, এর মধ্যে ৬৩৫ জন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছেন এবং ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। এক বছর ধরে এই সমীক্ষা গবেষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, ৩০৪ জন কিশোর-কিশোরী (৪৭.৯ শতাংশ) এবং ১২৪ জন প্রাপ্তবয়স্কের (৪২.৬ শতাংশ) শ্বাসযন্ত্রে ভাইরাল সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল।

গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৬৩৫ জন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ১০.৫ শতাংশেরই ত্বকের রোগ দেখা দেয়। ৪.৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্নায়ুর রোগ দেখা দিয়েছে এবং ১০.২ শতাংশ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সাধারণ রোগ দেখা গিয়েছে। ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও একই সমস্যা দেখা গিয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাধারণ ব্যাধিগুলির শতাংশ ছিল ৮.৯ শতাংশ। পেশি এবং হাড় সম্পর্কিত রোগ ৫.৮ শতাংশের মধ্যে এবং স্নায়ু সম্পর্কিত রোগ ৫.৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা গিয়েছে। নারীদের ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আরও মারাত্মক।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৪.৬ শতাংশ নারীদেরই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড সম্পর্কিত সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে। ২.৭ শতাংশের চোখের সমস্যা এবং ০.৬ শতাংশ নারীদের মধ্যে হাইপোথাইরয়েডিজমের সমস্যা দেখা গেছে। ০.৩ শতাংশের স্ট্রোক এবং ০.১ শতাংশের মধ্যে গুইলেন-বেরি সিন্ড্রোম দেখা গিয়েছে। জিবিএস হল এমন একটি বিরল রোগ যেখানে দেহ ধীরে ধীরে প্যারালাইজড হয়ে যায়।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দুটি ডোজ গ্রহণকারী প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কোভ্যাক্সিনের তিনটি ডোজ গ্রহণকারী প্রাপ্তবয়স্কদের ঝুঁকি চার গুণ বেশি।

কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পর কতজনের মৃত্যু হয়েছে?

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে, চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ ছিলেন। চারজনেরই ডায়াবেটিস ছিল। তিনজন প্রাপ্তবয়স্কেরও উচ্চ রক্তচাপেরও সমস্যা ছিল। চারজনের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে স্ট্রোকের কারণে।

একটি মৃত্যু কোভিড-পরবর্তী রাইনোসেরিব্রাল মিউকোরমাইকোসিসের জেরে হয়েছিল। এটি একটি বিরল রোগ যা প্রধানত নাক, প্যারানাসাল সাইনাস এবং মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে।

চতুর্থ মৃত্যু একজন নারীর, যিনি টিকা দেওয়ার পরে বেশ কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও তার অজ্ঞান হওয়ার কারণ জানা যায়নি।

সূত্র: ইকোনমিক টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমস

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com