শিরোনাম
লিলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় লিভারপুল বঙ্গভবন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এখনো ‘অ্যাডমিন ক্যাডার’ হিসেবে কর্মরত সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এস কে সুরের গোপন ভল্টের সন্ধান বলিউড থেকে সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কারণ জানালেন নার্গিস মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুর্নীতির মহারাজা ইনাম ইলাহী চৌধুরী লস অ্যাঞ্জেলেসে কষ্টের কথা জানান নোরা শেষ মুহূর্তে উসমান ম্যাজিক, হ্যাটট্রিক শিরোপা পিএসজির আসিফ নজরুলকে শেখ হাসিনার বিষয়ে যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া নারী সহকর্মীকে খুন করে দেহ ২৬ টুকরো, অতঃপর…… ২৯ সেপ্টেম্বর দেখা যাবে দ্বিতীয় চাঁদ, থাকবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফরের অন্তরালে রাজনৈতিক হিসাব

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

ডোনাল্ড লু। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারত শ্রীলঙ্কা ঘুরে তিনদিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। ঢাকা-ওয়াশিংটনের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে বিষয় উল্লেখ হলেও তার সফর নিয়ে অনেক হিসাব নিকাস চলছে। কূটনীতি, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লু সফরে এবার রাজনীতিতে প্রকাশ্যে উচ্ছ্বাস না থাকলেও অন্তরালে আওয়ামী লীগ-বিএনপি এবং অন্যান্য দলসহ বিশেষ মহলের কাছে রাজনৈতিক হিসাবেই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক সমীকরণ যুক্ত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এই সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা হিসাব খুঁজবেন। ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন পূর্ববর্তীতে ঢাকায় অবস্থান করে লু যে সব বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন তার বাস্তবতা এবং উপেক্ষিত বিষয় নিয়েও জবাব চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রসংক্রান্ত চুক্তির বিষয়েও কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় থাকার পরও বর্তমানে ঋণের ভারে জর্জড়িত হয়ে পড়েছে সরকার। আয় করা রাজস্বের বেশিরভাগই চলে যাচ্ছে সুদ দিতে। এসব বিষয়ে মার্কিন কূটনীতি এবং রাজনীতির আগামীর প্রেক্ষাপট সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। ভোট পূর্বের সফরে গণতন্ত্র , মানবাধিকার ও গ্রহণযোগ্য ভোটের বিষয়ে বার্তা দিয়ে গেলেও এবার তিনি কী বার্তা দেবেন সেদিকেই দৃষ্টি সচেতন মহলের।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সর্বাধিক ভূমিকা পালন করা শীর্ষ এই ব্যক্তি ঢাকা পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা) খন্দকার মাসুদুল আলম অতিথিকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সহ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার এবং অবাধ, উন্মুক্ত ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য মার্কিন সমর্থন প্রদর্শন করতে এই সফরে রয়েছেন ডোনাল্ড লু।

কূটনৈতিক বিষয়ে চোখ রাখা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে ওয়াশিংটনের স্বতন্ত্র অবস্থান ছিল, যা এখনো বিদ্যমান। ভোট-পূর্ব রাজনীতিতে বাড়তি উত্তাপ থাকায় ওই সময় উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লুর যুগল সফরটি কূটনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলে ছিল। দেশ ও দেশের বাইরে অধিক আলোচনায় ছিলো। উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু সেদিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করেছিলেন। রাজনৈতিক সভা সমাবেশেও লু সফর নিয়ে গরম হাওয়া বয়ে গিয়েছিলো। হয়েছে তর্ক বিতর্ক। ঢাকা সফরের পর গেলো বছরের ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ,বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে শর্তহীন সংলাপের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন ডনাল্ড লু। দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কাছে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে চিঠিও পৌঁছে দেন পিটার হাস। কিন্তু সেই আহ্বানে কাজ হয়নি। সংলাপ তো নয়ই বরং আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে। নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া কিছু দেশের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের গভীরতা বেড়েছে।

ঢাকা সফরের প্রথম দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নৈশভোজে যোগ দেন। এদিন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। সফরের দ্বিতীয় দিন প্রথমে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ও পরে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করার কথা রয়েছে। পরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের যে কমন স্ট্যান্ড গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার সেই বিষয়গুলো নিয়ে সাধারণভাবে কথা বলবে। তবে এর আগে হওয়া বেশ কিছু আলোচনার ফলোআপও তারা জানতে চাইবে। কয়েক মাস আগে বড় একটা ডেলিগেশন এসেছিলো। তার ফলোআপ হতে পারে। তাদের এখন হয়তো মনোযোগ অর্থনৈতিক দিকে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজনীতি নিয়ে তারা বলেই যাবে।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় যে আলোচনা হবে তাতে রাজনীতি থাকবেই। কারণ দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মধ্যেই রাজনীতি রয়েছে। রাজনীতি নিয়ে কী আলোচনা হলো তা প্রকাশ করা হলে তো জানা যাবেই, এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো না হলেও তা প্রকাশ পাবে বলে মনে করেন তিনি। তবে রাজনীতিতে কিল খেয়ে কিল হজম করে ফেলবে যুক্তরাষ্ট্র এটা আমি মনে করি না।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র যে মুক্ত, অবাধ ও সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দেখতে চায়, ডোনাল্ড লুর সফরে সেটাই গুরুত্ব পাবে। ঢাকা সফরে দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ক ছাড়াও জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার

গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি ঢাকা-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করেছে। সেগুলো (র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি) যাতে সহজ করা হয় আলোচনায় যুক্ত থাকবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মার্কিন সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড ল্যু নিজ দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আলোচনা করতে এসেছেন। তিনি বলেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসলেও, তাদের ভিসা নীতিসহ কোনো ইস্যুকেই আমরা কেয়ার করি না। তিনি কোনো মন্ত্রীও নন, তাকে নিয়ে এত মাতামাতি কেন? তাকে আমরা নিমন্ত্রণ করে আনছি না, তারা তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে এদেশে আসেন। সম্পর্ক থাকলে আসতে হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, লু (ডোনাল্ড লু) নিয়ে এত উৎসাহিত আমরা নই, লু নিয়ে উৎসাহিত আপনারা (আওয়ামী লীগ)। লু কী বার্তা নিয়ে আসছেন, সেটা আপনারা জানেন, আমাদের জানার কথা নয়। এর আগে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও জানিয়েছেন লু সফর নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com