২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ভর্তি হন ১৪ হাজার ১৫৭ জন। এদের মধ্যে ৮ হাজার বা ৫৬ ভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। তবে চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলে এই হার বেড়ে হয়েছে ৭০ শতাংশ। দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের ৫৮ ভাগের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছর। ঈদের আগে ও পরে সতর্কতার সঙ্গে মোটরসাইকেল চালানোর আহ্বান চিকিৎসকদের।
সরেজমিনে পঙ্গু হাসপাতালে দেখা যায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেকেই চিকিৎসাধীন। কেউ কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় একবছর ধরে। হুমায়ূন কবির মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে চিকিৎসাধীন পঙ্গু হাসপাতালে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর পা কেটে ফেলতে হবে।
এলোমেলো হয়ে গেছে চিকিৎসাধীন আবু-মিয়ার জীবনের গল্প। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে নয় মাস ধরে ভর্তি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে।
নিটোরের পরিচালক অধ্যাপক কাজী শামীম উজজামান ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় একদিকে যেমন পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাষ্ট্র। মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়া উচিত।
যেকোনো উৎসবের আগে বাড়ে দুর্ঘটনা। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েন তরুণেরা। আহতদের ২২ ভাগের বয়স ২৬ থেকে ৩০ বছর। এতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী হারাচ্ছে দেশ।
সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী দেশের তালিকার শীর্ষে ভিয়েতনাম, প্রতি হাজারে ৩৫৮ জন। কিন্তু মৃত্যুহার প্রতি ১০ হাজারে ৪ দশমিক ১ ভাগ। আর বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ব্যবহারকারী ৭ জন হলেও মৃত্যুহার ২৮ শতাংশ। যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, অতিরিক্ত গতি, সচেতনতার অভাব, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা- এসব কারণেই দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। পাশাপাশি অল্প বয়সীদের হাতেও দিয়ে দেওয়া হচ্ছে মোটরসাইকেল। ফলে বেড়েই যাচ্ছে মৃত্যুহার।
গবেষকেরা বলছেন, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার করলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হওয়ার ঝুঁকি কমে ৭০ ভাগ।