মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বজ্রপাতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে স্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) তিনজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) পল্লী বিদ্যুতের মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন – পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক সোহেল রানা চৌধুরী, সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল হুদা ও জুড়ী কার্যালয়ের ইনচার্জ রেজাউল করিম তালুকদার। অন্যদিকে শিক্ষানবিশ লাইনম্যান মো. আশিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আরইবির পক্ষ থেকে প্রধান প্রকৌশলী বিশ্বনাথ শিকদারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিটির সদস্যদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক একরামুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামে রহমত আলী নামের এক ব্যক্তির জমিতে টিনের ঘর বানিয়ে বাক্প্রতিবন্ধী দিনমজুর ফয়জুর রহমান (৫০) তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পাঁচ-ছয় বছর ধরে থাকতেন। তার ঘরের ওপর দিয়ে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন টানানো ছিল।
গত ২৬ মার্চ ভোরে বসতঘরের ওপর ঝড় ও বজ্রপাতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে টিনের পুরো ঘরটি বিদ্যুতায়িত হয়। এতে পরিবারের পাঁচ সদস্য ফয়জুর রহমান (৫০), তার স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), মেয়ে সামিয়া (১৫ ), সাবিনা (০৯) এবং একমাত্র ছেলে সায়েম উদ্দিন (৭) ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরের দিন এ ঘটনায় আহত ফয়জুর রহমানের ছোট মেয়ে সোনিয়া আক্তার (৮) ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান।