ঢাকা : তলে তলের কোনো ঘটনা দেশের রাজনৈতিক সংকট কাটাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
বুধবার (৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সাভারের আমিন বাজারে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোথায় স্যাংশনস, কোথায় ভিসানীতি, তলে তলে সবার সঙ্গে আপস হয়ে গেছে। নির্বাচন হবে, খেলা হবে। অক্টোবর থেকে খেলা শুরু। আগামী মাসে সেমিফাইনাল, জানুয়ারিতে ফাইনাল।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকার নির্বাচনের তোড়জোড় চালাচ্ছে। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এমন কিছু আমরা ভারতকে দিয়েছি, ভারত কখনও তা ভুলতে পারবে না।’ কিন্তু কী দিয়েছেন তা তিনি বলেননি। যেহেতু বলেননি, তাহলে তা তলে তলের ব্যাপার। সেজন্য আমি বলি, তলে তলের কোনো ঘটনা বাংলাদেশের মুক্তির কারণ হবে না, সংকট কাটাবে না। তলে তলের ঘটনা রাজনৈতিক সংকট মীমাংসা করবে না।
তিনি বলেন, তলে তলে না খেলে প্রকাশ্যে আসুন। যিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া), যিনি নির্বাচনে কখনও পরাজিত হননি, তাকে সামান্য চিকিৎসার সুযোগ দিন। তার পছন্দের জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিন। হাজী সেলিম ও মোফাজ্জল হোসেন মায়া সাহেবরা যদি বিদেশে চিকিৎসা পেতে পারেন, জামিন পেতে পারেন (সাজাপ্রাপ্ত হয়েও), তবে খালেদা জিয়া কেন পারবেন না?
তিনি আরও বলেন, দেশে কি দুটি আইন চলছে? একটি আইন বিরোধীদলের জন্য, অন্যটি সরকারি দলের জন্য। এমন দেশ পৃথিবীর আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশে ঘোরতর অন্ধকার সময় চলছে। এত খারাপ সময়ে বাংলাদেশ আগে কখনও নিপতিত হয়নি। বাংলাদেশে এখন কথা বলা যায় না। আপনি যদি সত্য কথা বলেন, তাহলে বিপদে পড়ার আশঙ্কাই বেশি। তিনি যদি সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও লেখকও হন- এমনকি যদি দেশের বাইরেও থাকেন, তাহলেও বিপদে পড়তে পারেন। অর্থাৎ মামলা খেতে পারেন। স্বজনরা যারা দেশে আছেন, তারা গ্রেপ্তার হতে পারেন। তাদের মালামাল ক্রোক হতে পারে।
তিনি বলেন, এ এক বিচিত্র দেশ। যে দেশ গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছে, এক সাগর রক্ত দিয়েছে এবং মা-বোনরা সম্ভ্রম হারিয়েছে, সেই দেশে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও জনগণের অধিকার নেই। জনগণ চাইলেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন না। কেন্দ্রে গেলে ভোটারকে বলা হয়- আপনার ভোট হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, যে নেত্রী ১৬ টাকার চাল ১০ টাকায় খাওয়াবেন বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এসে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি চাল খাওয়াচ্ছেন। তারা অবলীলায় নিজেদের ওয়াদা ভুলে যান। এ কেমন দেশ, যেখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। আপনি ঘরে থাকেন বা বাইরে, ভালো থাকবেন বা নিরাপদে থাকবেন এ নিশ্চয়তা নেই।