শিরোনাম
লিলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় লিভারপুল বঙ্গভবন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এখনো ‘অ্যাডমিন ক্যাডার’ হিসেবে কর্মরত সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এস কে সুরের গোপন ভল্টের সন্ধান বলিউড থেকে সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কারণ জানালেন নার্গিস মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুর্নীতির মহারাজা ইনাম ইলাহী চৌধুরী লস অ্যাঞ্জেলেসে কষ্টের কথা জানান নোরা শেষ মুহূর্তে উসমান ম্যাজিক, হ্যাটট্রিক শিরোপা পিএসজির আসিফ নজরুলকে শেখ হাসিনার বিষয়ে যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া নারী সহকর্মীকে খুন করে দেহ ২৬ টুকরো, অতঃপর…… ২৯ সেপ্টেম্বর দেখা যাবে দ্বিতীয় চাঁদ, থাকবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত

১১ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা এমটিএফই

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩

ঢাকা: ঘরে বসেই লাখপতি! না, শুধু লাখপতি হওয়ার যুগ শেষ, স্বপ্ন এখন কোটিপতি হওয়ার। এ জন্য নতুন প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ। তা-ও আবার যেনতেন প্রতিষ্ঠানে নয়, কানাডিয়ান কোম্পানিতে বিনিয়োগ; যারা কিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করে বিনিয়োগকৃত অর্থকে বানিয়ে দেবে কয়েক গুণ।

এখানেই শেষ নয়, কাউকে বিনিয়োগ করাতে পারলে পাওয়া যাবে মোটা অঙ্কের কমিশন। তবে হায়, একি! যে কোম্পানিকে ঘিরে এত স্বপ্ন তার প্রতিষ্ঠাতা কিংবা পরিচালকদের দেখেনি কেউ। এমনকি কোম্পানিটির নেই কোনো কার্যকর ওয়েবসাইটও।

শুধু শুনে শুনে সেই কোম্পানিকে বিশ্বাস করেই প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক। ঠিক এমন পাতানো ফাঁদের নাম এমটিএফই বা মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ।

গ্রাহকরা বলছেন, কোম্পানিটি মূলত একটি অ্যাপভিত্তিক বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ছিল। ছিল কারণ এখন আর নেই। অ্যাপ আছে, তবে কোনো গ্রাহকেরই মূলধন নেই। যেখানে গ্রাহকরা তাদের লাখ লাখ টাকা ডলার হিসেবে বিনিয়োগ করেছিলেন, সেখানে এখন সেই ডলার উধাও হয়ে মাইনাস হয়ে রয়েছে একেকটি ভৌতিক সংখ্যা।

এবার একটু ফিরে তাকানো যাক। বেশ কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অ্যাপটিতে কেউ ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন তাকে দেয়া হতো প্রায় ১৩ ডলার লাভ। তবে এত অল্প বিনিয়োগ হলে তো আর বড় লাভ আসবে না। এ জন্য সেই অ্যাপ থেকে ৫ হাজার, ১০ হাজার, এমনকি ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন গ্রাহকরা।

বিনিয়োগ যত বেশি, লাভের পরিমাণও তত বেশি দিতো অ্যাপটি। বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য আবার মাঝে মাঝে লোকসান দেখানো হতো। গ্রাহকরা জানান, মাসে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের ওপর লাভ পাওয়া যেত।

কেউ ৫০১ ডলার বা ৫৮ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১১৬ টাকা ধরে) বিনিয়োগ করলে তার প্রতিদিন লাভ আসতো প্রায় ১৩ ডলার বা ১৫০০ টাকা। বিনিয়োগ ৯০১ ডলার বা ১ লাখ ৫ হাজার টাকা হলে প্রতিদিন লাভ পাওয়া যেত প্রায় ৩ হাজার টাকা। কেউ ৫ হাজার ডলার অর্থাৎ ছয় লাখ টাকার মতো বিনিয়োগ করলে প্রতিদিন লাভ আসতো প্রায় ৩২ হাজার টাকার সমপরিমাণ। এই লাভ আবার মাঝে মাঝে দ্বিগুণও দেয়া হতো বলে জানান গ্রাহকরা।

কীভাবে এত লাভ আসত? এমন প্রশ্নে রশিদ নামে এক বিনিয়োগকারী জানান, ‘আমাদের বুঝানো হতো যে বিনিয়োগ করা ডলারগুলো দিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসা করছে কোম্পানি।’

এ ব্যবসায় এত লাভ হলে তো সবাই তাই করত- এমন প্রশ্নে তিনি জানান, কোম্পানি তাদের বুঝাত ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই’ প্রযুক্তির মাধ্যমে রোবোটিক লেনদেন করত এমটিএফই। অর্থাৎ রোবট নিজেই প্রতিদিন লেনদেন করত আর তাদের লাভ এনে দিত।

শুধু বিনিয়োগের ওপর লাভই নয়, কাউকে বিনিয়োগ করাতে পারলে তাদের লাভের ওপর পাওয়া যেত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন। এমন করে কারও মাধ্যমে ১০০ জন গ্রাহক বিনিয়োগ করলে তার পদবি হতো ‘সিইও’। কমিশন আর নিজের বিনিয়োগের অর্থ মিলে ওই কথিত সিইও মাসে ১৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারত।

রাশেদ নামে এক বিনিয়োগকারী জানান, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক শ’ ‘সিইও’ পদবিধারী ব্যক্তি ছিলেন কোম্পানিতে। তাদের প্রত্যেকের অধীনে ছিলেন কয়েক শ’ বিনিয়োগকারী। এই পদে এলে আবার তাদের জন্য অফিস নেয়ার বাধ্যবাধকতাও ছিল। অর্থাৎ হোতাদের কোনো অফিস না থাকলেও পদবিধারী সিইওদের দিয়ে তারা অফিস নেয়ার কাজটি করাত। রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে কয়েক শ’ অফিস রয়েছে বলেও জানা গেছে।

লোভনীয় অফার ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ, দুবাই, ভারত, নেপালসহ বেশ কয়েকটি দেশে। তবে জানা যায়, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক ছিলেন বাংলাদেশের। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, এমনকি জেলা-উপজেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছিল অ্যাপটির ফাঁদ। সব মিলিয়ে গ্রাহকদের সিংহভাগ ছিলেন বাংলাদেশি। তবে ঠিক কত গ্রাহক বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ করেছেন, তার সঠিক হিসাব কারও কাছে নেই।

কীভাবে বিনিয়োগ?

বাংলাদেশে যে কোম্পানির কোনো নিজস্ব অফিস নেই, নেই কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, তাদের কাছে বিনিয়োগের উপায় কী? এমন প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক।

এর উত্তরে জানা গেছে- টাকা নয়, ডলারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা হতো এমটিএফই-তে। এই ডলার আবার আসল ডলার নয়, ভার্চুয়াল ডলার। বাইন্যান্স নামক অ্যাপ থেকে যে ডলারের সিংহভাগ কিনতেন গ্রাহকরা। বাইন্যান্স হচ্ছে একটি চাইনিজ অ্যাপ কোম্পানি, যাদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন হয়ে থাকে।

লক্ষণীয় ব্যাপার, সেই অ্যাপে ঢুকে যে কেউ চাইলে এজেন্টদের কাছ থেকে ডলার কিনতে পারছেন। যার কাছ থেকে ডলার কিনছেন, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কিংবা বিকাশ/নগদ অ্যাকাউন্টে সমপরিমাণ টাকা দিলেই পাওয়া যাচ্ছে ভার্চুয়াল ডলার।

কয়েক বছর ধরে এভাবে ভার্চুয়াল ডলারের লেনদেন হলেও বাংলাদেশ ব্যাংককে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে আবার হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দুবাইয়ে থাকা এজেন্টদের কাছে ডলার নেয়া হতো বলেও জানান অনেক গ্রাহক।

বিনিয়োগকারীরা যা বলছেন

কেউ দুশ’, কেউ পাঁছ শ’ আবার কেউবা হারিয়েছেন কয়েক হাজার ডলার। তা নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও প্রতিকার পাওয়ার প্রশ্নে নিরুপায় এমটিএফই-তে বিনিয়োগ করা গ্রাহকরা।

বেশিরভাগ গ্রাহকই বলছেন, কার কাছে গেলে প্রতিকার মিলবে তা তারা জানেন না। রাজধানীর মতিঝিল এলাকার রাশেদ নামে এক বিনিয়োগকারী জানান, খুব কাছের এক ভাইয়ের কথায় বিনিয়োগ করে এখন আটকে গেছেন তিনি।

নিউজবাংলাকে ওই গ্রাহক বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই সন্দেহ করতাম এটা অবাস্তব। তবে অনেকেই পাচ্ছে এমনটা দেখে কিছু টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম।’

এখন কী করণীয়- এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘কী যে করুম ভাই বুঝতেছি না।’

বাড্ডার বাসিন্দা শফিক জানান, অন্তত কয়েক মাস থাকবে এমন আশ্বাসে বিনিয়োগ করেছেন তিনি। বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল কোম্পানিটি মাত্র উঠতির দিকে, সে জন্যই বিনিয়োগ করেছিলাম। যেই ডলার উইথড্র দিলাম সেটা আটকে রাখল।’

অবশ্য তিনি ক্ষোভ জানান বাইন্যান্সের ওপর। বলেন, ‘বাইন্যান্স তো প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানি। তাদের কাছ থেকে ডলার কিনে এমটিএফই-তে নিলাম, তবে আনা গেল না।’

জানা যায়, দেশের পুঁজিাবাজারের নাজুক অবস্থায় দেখে এখানকার অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তাদের মূলধন বিনিয়োগ করেছিলেন এমটিএফই-তে। তারা এখন সর্বস্বান্ত। একদিকে পুঁজিবাজারের লোকসান, তার ওপর এমটিএফই বন্ধ হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুঁজিবাজারের একজন বিনিয়োগকারী বলেন, ‘শেয়ারে লোকসান করে একটু লাভের আশায় এখানে এলাম। কপালটা আসলেই খারাপ আমার।’

ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাটপারি এখন ন্যাশনাল থেকে ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে চলে গেছে, যার ফাঁদে পড়লাম আমরা।’

যে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম এমন ঘটনাকে আশঙ্কার চোখে দেখছেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অ্যাপের মাধ্যমে এমন প্রতারণা হলে পুলিশ কিংবা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব।’

উদাহরণ টেনে তিনি বলন, ‘ডেসটিনি, যুবক, ইউনিপেটুইউ- এমন সব কোম্পানি একসময় মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের কথা বলে প্রতারণা করেছে। তবে অ্যাপের মাধ্যমে এমন প্রতারণা দ্বিগুণ ভয়ংকর। আগে কারও হাতে হাতে প্রতারণা হতো, কোনো বিপদ হলে তাকে ধরা যেত। এখন ধরবেন কাকে?’

শুধু প্রযুক্তি দিয়ে এমন প্রতারণা বন্ধ করা সম্ভব নয় বলেও মত দেন এই বিশেষজ্ঞ।

ড. মাহফুজুলের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব ব্যাংককে এজন্য এক হয়ে কাজ করতে হবে। কোনো সন্দেহজনক লেনদেন হলে তা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে এসব বন্ধে জনগণের সচেতনতার বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু লোকের অতিলোভ কাজে লাগাচ্ছে এসব প্রতারক চক্র, তাই আগে তাদের সচেতন হতে হবে।’ যেখানেই অবাস্তব কিছু দেখবেন, সেখানে না যাওয়াটাই হবে যৌক্তিক।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করণীয়

প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশের বাইরে টাকা পাচার সম্পূর্ণ বেআইনি। শুধু তা-ই নয়, ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা আইনত অবৈধ। তারপরও অ্যাপের মাধ্যমে এমন প্রতারণা চলছে। এতে একদিকে দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

এর আগে ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয়, অবৈধ অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স ও ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে। আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার বৈঠকে এ চিত্র উঠে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব পক্ষ এক হয়ে কাজ করতে হবে।

এমটিএফই অ্যাপের ফাঁদের বিষয়ে এখনও অবগত নন বলে জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। টেলিফোনে তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের এখানে সরাসরি কিছু করার নেই। আমরা বলেছি এসব লেনদেন অবৈধ। তারপরও প্রতিনিয়ত এগুলো হচ্ছে। আমরা তো সরাসরি এদের ধরতে পারি না, অবৈধ কিছু হলে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের ধরবে।’

অনলাইন প্রতারণায় এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে পাচার হচ্ছে- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএফআইইউ ইতোমধ্যে এমন ৫০টিরও অধিক সাইট বন্ধ করেছে এবং প্রতিনিয়ত করছে। তবে সাধারণ মানুষের সাবধানতার বিকল্প নেই।’

বার বার সতর্ক করার পরও কেন মানুষ এসব জায়গায় বিনিয়োগ করে সেই প্রশ্ন তুলেছেন মেজবাউল হক। বলেন, ‘নাগরিক হিসেবেও তো দায়িত্ব রয়েছে। যেই-সেই জায়গায় কেন আমি বিনিয়োগ করব। মানুষ সচেতন না হলে আমাদের পক্ষে আর কতটা করা সম্ভব?’

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com