আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায় বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। গত রোববার দেশটির আমহারা অঞ্চলের ফিনোট সেলাম শহরে সন্দেহভাজন এই হামলার ঘটনা ঘটে।
শহরের একটি হাসপাতালের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইথিওপিয়ার আমহারা অঞ্চলে সন্দেহভাজন বিমান হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ফিনোট সেলাম শহরে হওয়া এই হামলাকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে মারাত্মক হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির ওই অঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনী ফ্যানোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে সেনাবাহিনী।
ইথিওপিয়ার মানবাধিকার কমিশন ‘মারাত্মক এই শত্রুতা ও সংঘাত’ নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে। এছাড়া ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সরকার গত ৪ আগস্ট আমহারা অঞ্চলজুড়ে ছয় মাসের জরুরি অবস্থা জারি করে।
ফেডারেল সরকার আমহারার প্রতিরক্ষা দুর্বল করার চেষ্টা করছে বলে আধাসামরিক বাহিনী ফ্যানোর অভিযোগ সামনে আসার পর এই লড়াই গতি পায়। গত বছরের নভেম্বরে উত্তর টাইগ্রে অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটিই ইথিওপিয়ার সবচেয়ে খারাপ সংকট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
অবশ্য টাইগ্রে যুদ্ধের সময় ফেডারেল বাহিনীকে সমর্থন করেছিল ফ্যানো। তবে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ফ্যানো নিজেদের নিরস্ত্রীকরণ করতে অস্বীকার করে। আর এর ফলেই ফেডারেল সরকার আমহারা অঞ্চলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে এবং সংঘাতের সৃষ্টি হয়।
হাসপাতালের ওই কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গত রোববার হামলার পর হতাহত যেসব মানুষ হাসপাতালে এসছিলেন তারা হয় ‘সাধারণ বেসামরিক পোশাক বা রোববারের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেছিলেন’।
তিনি বলেন, ‘হামলায় নিহতদের মধ্যে ১৩ বছর বয়সী একটি শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ ব্যক্তি পর্যন্ত রয়েছেন। কী কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে তা দেখার সুযোগ আমি পাইনি… তবে বাসিন্দারা বলেছে- সেখানে ড্রোন হামলা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সেদিন ওই হাসপাতালে তার একজন আত্মীয়কে দেখতে গিয়েছিলেন। রয়টার্সকে তিনি বলছেন, তিনি হাসপাতালে ১৪টি মৃতদেহ দেখেছেন এবং একজন চিকিৎসাকর্মী বলেছেন, আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে আহত আরও ৫৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইথিওপিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (ইএইচআরসি) মানবাধিকার আইনের সকল ধরনের লঙ্ঘন অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য ‘বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলোর প্রতি’ আহ্বান জানিয়েছে।
বিবিসি বলছে, চলমান এই সহিংসতা বিভিন্ন পক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করছে। যেমন ইসরায়েলি সরকার গত সপ্তাহে ওই এলাকা থেকে তার নাগরিক এবং ইহুদি জনগণকে সরিয়ে নিয়েছে। মূলত আমহারা অঞ্চলটি ইহুদি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার সদস্যের আবাসস্থল।
ইএইচআরসি বলেছে, বিক্ষোভকারীদের হত্যা, পুলিশ স্টেশন এবং কারাগার থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করা এবং আমহারা আঞ্চলিক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করার মতো বিষয়গুলো নথিভুক্ত করেছে তারা।