নিঃশব্দে ফের ঢাকায় চীনের বিশেষ দূত

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩

ঢাকা: চীনের এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত দেং শি জুন ফের ঢাকায় এসেছেন। ৩ মাসের মাথায় রোববার বরাবরের মতো নিঃশব্দেই (দ্বিতীয়বার) এলেন তিনি। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, সোমবার দিনভর ব্যস্ত কর্মসূচীতে কাটিয়েছেন তিনি। মধ্যাহ্নে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ছাড়াও রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সম-সাময়িক বিষয়াদি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সূত্র মতে, চীনা দূত প্রথমে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এবং পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

দু’টি বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা এসেছে জানিয়ে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে, রাখাইনে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা যে জরুরি সেটা এবারের আলোচনায় মেনে নিয়েছেন চীনের বিশেষ দূত দেং শি জুন। ঢাকার তরফে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বাগড়ার বিষয়টিও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এক কর্মকর্তা সন্ধ্যায়  বলেন, আলোচনায় স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনে জোর দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের আস্থায় নেয়া ছাড়া একজনকেও ফেরৎ পাঠানো সম্ভব নয়।

রোহিঙ্গাদের আস্থা পূনঃপ্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারকে অবশ্যই রাখাইনে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

ঢাকা স্পষ্টভাবে চীনা দূতকে জানিয়েছে, বিলম্ব হলেও প্রত্যাবাসন হতেই হবে। বছরের পর বছর প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষায় থাকা যাবে না। স্মরণ করা যায়, গত ছয় বছরে এবারই প্রথম রোহিঙ্গারা সরেজমিনে রাখাইন ঘুরে দেখার সুযোগ পান। শুরুতে রাখাইন সফরকারী দলটি প্রত্যাবাসনে আগ্রহী হলেও পরে তারা বেকে বসে। তাছাড়া পশ্চিমারাও চীনের উদ্যোগে প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন থমকে যায়!

উল্লেখ্য, ঢাকা সফরের আগে চীনের বিশেষ দূত দেং শি জুন মিয়ানমার সফর করেন। সেখানে তিনি সেনাশাসক জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। ওই আলোচনায় মিয়ানমারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় চীনের সহযোগিতার পাশাপাশি রাখাইনের শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। মিয়ানমারের সরকারি সূত্র মতে, গত শুক্রবার চীনা দূত দেং শি জুন মিয়ানমার সফরকালে দেশটির আন্তর্জাতিক সহায়তামন্ত্রী কো কো হ্লাইংয়ের সঙ্গেও দেখা করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমারের মন্ত্রীকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি রাখাইনের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে ফেরানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তার আহ্বান জানান।

এপ্রিলের সফর এবং পরবর্তীতে যে আলোচনা করেছিলেন চীনা দূত

গত এপ্রিলে অনেকটা নিঃশব্দে ঢাকা ঘুরে যাওয়া চীনের বিশেষ দূত দেং শি জুন পরীক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ১৭৬ রোহিঙ্গাকে যুক্ত করে প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তার সফরের ফিরতি সফর হিসেবে এক সপ্তাহের মধ্যে (এপ্রিলের দ্বিতীয়ার্ধে) কুনমিং গিয়েছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সেখানে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে (ত্রিপক্ষীয়) বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর টার্গেট ঠিক হয়েছিল। কিন্তু না, বাংলাদেশের সব প্রস্তুতি সত্ত্বেও রাখাইনে অনুকূল পরিবেশের নিশ্চয়তা না পেয়ে রোহিঙ্গারা বিগড়ে যাওয়ায় আজ অবধি প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com