চট্টগ্রাম: আমেরিকার স্যাংশনে আওয়ামী লীগ সরকারের হাঁটু কাঁপছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা বিদেশে রয়েছে, টাকা পাচার করেছে বিদেশে। ভিসা নীতি এমন হয়েছে, এবার যদি ভোটে কারচুপি করো, দিনের ভোট রাতে করো বা কুত্তা মার্কা নির্বাচন করো; তাহলে রেহাই নেই’।
বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউরি মোড়ে বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দেশটাকে এমন জায়গায় নিযে গেছে যে, আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। আমেরিকা থেকে স্যাংশন এসেছে। তারা বলে যে, আমরা আমেরিকার ভিসা নীতিতে ভয় পাই না। এখন এমন ভয় পেয়েছে যে, তাদের হাঁটু কাঁপা শুরু হয়েছে।
১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, তারা আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছেন। আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। কোর্টে কোনো বিচার হয় না। মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়। হাইকোর্টে আগাম জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আবার কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কারাগার থেকে হাইকোর্টে জামিন নিয়ে বের হই, তখন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের কোথাও শান্তি নেই। পদে পদে গলা টিপে ধরা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশ চেয়েছিলাম। যেখানে আমাদের ভোট আমরা দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। কথা বলতে পারব, সরকারের সমালোচনা করতে পারব এবং লিখতে পারব। কিন্তু আজকে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এখন সাংবাদিক ভাইয়েরা লিখতে পারেন না। কিছু লিখলেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশে ৪২ ভাগ পোশাক কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে। ডলার না থাকায় ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে পারছেন না। সরকারি লোকেরা সব পাচার করে দিয়েছে। তারা ব্যাংক লুট করেছে। সরকার উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে জনগণের টাকায় আওয়ামী লীগের উন্নয়ন হয়েছে।
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির জাতীয় ও চট্টগ্রামের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে কাজির দেউরি মোড়ে সমাবেশ শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম ও আশেপাশের জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দিতে থাকে। এদিন সমাবেশে যোগ দেওয়ার পথে নগরের চকবাজার থানা এলাকায় বিএনপির একটি মিছিলে হামলা করে ছাত্রলীগ। এসময় কিছুক্ষণ ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে তরুণদেরও শামিল করতে চট্টগ্রামে এই সমাবেশ করে বিএনপি। চট্টগ্রামের পর পর্যায়ক্রমে ১৭ জুন বগুড়ায়, ৭ জুলাই খুলনায়, ১৫ জুলাই বরিশালে, ২২ জুলাই সিলেটে এবং সর্বশেষ ২৯ জুলাই ঢাকায় এই তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।