গাজীপুর: বিএনপি নেতা আলী আজমকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় নেওয়ার ঘটনায় পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গায়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মো. আলী আজম একজন সাহসী রাজনৈতিক কর্মী। যে মামলায় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে সেই মামলার একহাজারভুক্ত আসামি নন তিনি। সবচেয়ে করুন দৃশ্য হচ্ছে আলী আজমের মা মারা গেলো এরপর প্যারোলে সে জানাজায় আসলেন কিন্তু মায়ের কবরে নামতে পারলেন না। সে চোর কিংবা ডাকাতও না। তবুও ডান্ডাবেড়ি পরেই মায়ের জানাজা পড়ালেন। এতে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।
গায়েশ্বর চন্দ্র রায় সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, আমরা অবৈধ পার্লামেন্ট দ্রুত সময়ের মধ্যে বিলুপ্তির দাবি করছি। সুষ্ঠু পরিবেশে অবাধ নির্বাচন করার জন্য সরকারের কাছে আহবান করেছি। এই সরকার একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। যা নিয়ে দেশ-বিদেশে নিন্দা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মো. আলী আজম গাজীপুর কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। তার মা মোসাম্মদ সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার বিকালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। আলী আজমকে একটি রাজনৈতিক মামলায় গত ২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জেলে থাকা অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর আলী আজমের মা মারা যান। ২০ ডিসেম্বর আলী আজম প্যারোলে মুক্তি পেয়ে হাতকরা ও ডান্ডা পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। নিজেই ইমামতি করেন মায়ের জানাজার। তার সেই জানাজার নামাজ পড়ানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গায়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা আলী আজমের বাড়িতে আসেন। গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা আলী আজমের পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং তার স্ত্রীর হাতে নগদ অর্থ অনুদান তুলে দেন।
এ বিষয়ে আলী আজমের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার লিপি বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা। তবে আমার স্বামী নির্দোষ। তার নামে কোনো মামলা ছিল না। আমার স্বামীর শোকে শাশুড়ি মা মারা গেছেন। সবচেয়ে কষ্ট লেগেছে সে বাড়িতে আসার পরেও কথা বলতে পারেনি।
মায়ের জানাজায় আসার পরও তার ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া খুঁলে দেওয়া হয়নি এটা আমাদের ও এলাকাবাসীকে কষ্ট দিয়েছে। জানাজা শেষে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন কিন্তু সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা সরকারের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই নির্দোষ মানুষটির মুক্তি চাই।