শিরোনাম
লিলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় লিভারপুল বঙ্গভবন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এখনো ‘অ্যাডমিন ক্যাডার’ হিসেবে কর্মরত সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এস কে সুরের গোপন ভল্টের সন্ধান বলিউড থেকে সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কারণ জানালেন নার্গিস মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুর্নীতির মহারাজা ইনাম ইলাহী চৌধুরী লস অ্যাঞ্জেলেসে কষ্টের কথা জানান নোরা শেষ মুহূর্তে উসমান ম্যাজিক, হ্যাটট্রিক শিরোপা পিএসজির আসিফ নজরুলকে শেখ হাসিনার বিষয়ে যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া নারী সহকর্মীকে খুন করে দেহ ২৬ টুকরো, অতঃপর…… ২৯ সেপ্টেম্বর দেখা যাবে দ্বিতীয় চাঁদ, থাকবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত

এস কে সুরের গোপন ভল্টের সন্ধান

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) ব্যক্তিগত গোপন ভল্টের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই ভল্টে বিপুল পরিমাণ টাকা, স্বর্ণ, বিদেশি মুদ্রা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দুদক সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

এদিকে গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুদক অভিযান চালিয়ে এস কে সুরের ধানমন্ডির বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করেছে। বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে পাওয়া গেছে নানা মূল্যবান সম্পদ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ওই টাকা গণনা করা হয়। বাসার মূল্যবান ৩৬টি সম্পদের তালিকা করা হয়।

সোমবার ( ২০ জানুয়ারি) ওই টাকা আদালতে জমা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা এস কে সুরের নিজস্ব ভল্ট খোলার জন্য আদালতে আবেদন পেশ করা হবে।

উদ্ধার টাকার ব্যাপারে আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, দুদক সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।

জানা যায়, ভল্ট খোলার আদেশ পাওয়া গেলে আজই ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদকের বিশেষ টিম কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গিয়ে ভল্ট খুলবে। ওই ভল্টে টাকাসহ যেসব সম্পদ পাওয়া যাবে সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যথারীতি আদালতে জমা দেওয়া হবে।

দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ অনুসন্ধান টিম গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় এস কে সুরের বাসায় অভিযান শুরু করে ও তা শেষ হয় বিকেল ৪টায়। তল্লাশির সময় একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারের সন্ধান পাওয়া যায়। লকারটি কোনোভাবে যাতে খোলা বা স্থানান্তর না হয়– এমন নির্দেশনা দিয়েই গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লকারের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী পরিচালক আমজাদ হোসেনের কাছে আবেদন পাঠিয়েছে দুদক। দুদক এই কর্মকর্তাকে বলেছে, আদালতের অনুমতি নিয়েই কমিশন লকারটি খুলতে চায়।

দুর্নীতি মামলার কোনো আসামির অর্থ-সম্পদ সংরক্ষণ করা খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যক্তিগত লকার এই প্রথম খুলতে যাচ্ছে দুদক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানেই অপরাধলব্ধ অর্থ সংরক্ষণ করেছেন এস কে সুর। একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাটকারী পি কে হালদারের দুর্নীতির সহযোগী ছিলেন তিনি। হালদারকে অবাধে দুর্নীতি করার সুয়োগ করে দিয়েছিলেন। বিনিময়ে এস কে সুর মোটা অঙ্কের মাসোহারা পেতেন। উপঢৌকন হিসেবে পেতেন নানা মূল্যবান সম্পদ। দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সুর বর্তমানে জেলে আছেন। আর হালদার বর্তমানে ভারতে জেলে আছেন।

নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এস কে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে নন-সাবমিশন মামলা করে দুদক। এই মামলার তদন্ত চলছে। আদালতে মামলার যে চার্জশিট দেওয়া হবে তাতে বাসা থেকে পাওয়া নগদ টাকা, সম্পদ, লকারের অর্থ-সম্পদ উল্লেখ করা হবে। এসব অর্থ-সম্পদ তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে কতটুকু অসংগতিপূর্ণ তা তুলে ধরা হবে চার্জশিটে।

গতকালের অভিযানে এস কে সুরের বাসায় যেসব সম্পদ পাওয়া গেছে সেগুলো হলো, ৪০টি ব্যাংক হিসাবের নথি, ৫০ লাখ টাকার পেনশন সঞ্চয়পত্রের নথি, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মচারী সমবায় ঋণদান সমিতিতে বিশেষ মেয়াদি ৭৫ লাখ টাকার আমানত, প্রাইম ব্যাংকে জমা ১০ লাখ টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট ১০ লাখ টাকার, ১৩ হাজার ৪০০ টাকার ১৩৪টি প্রাইজবন্ড, ১৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, একাধিক পাসপোর্ট, সনি টিভি, সনি স্পিকার, ঝাড়বাতি, জেনারেল দুই টনের এসি দুটি, দামি রেফ্রিজারেটর, খাটসহ নানা মূল্যবান সম্পদ।

অভিযান চলাকালে দুদক টিমের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও ধানমন্ডি থানার পুলিশ সদস্য ও দুদকের সশস্ত্র পুলিশ ইউনিটের সদস্যরা ছিলেন।

গত ১৪ জানুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সহায়তায় দুদক উপপরিচালক নাজমুল হোসাইনের নেতৃত্বে একটি টিম এস কে সুরকে গ্রেপ্তার করে। সম্পদের বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। ফিলিপাইনের একটি পত্রিকায় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সে সময়ে তৎকালীন গভর্নর পদত্যাগ করেন ও দুই ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন আরও দু’জন ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। তারা হলেন– আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান ও এস কে সুর। রিজার্ভ কেলেঙ্কারি চাপা দিতে সুরের বড় ভূমিকা ছিল। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দুদক। গত ২৩ ডিসেম্বর সুর ছাড়াও তার স্ত্রী ও মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com