শেষ মুহূর্তের গোলে জয়বঞ্চিত বাংলাদেশ

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : ইনজুরি সময়ের গোলে বাংলাদেশকে রুখে দিয়েছে নেপাল। আজ (বৃহস্পতিবার) কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশ ৯০ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও শেষ রক্ষা হয়নি।

ইনজুরি সময়ের গোলে ড্র করে মাঠ ছেড়েছে নেপালের মেয়েরা। এই ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘ ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরলেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। দুই দলের দ্বিতীয় ম্যাচ রোববার।

প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হওয়ার পর ৬৫ মিনিটে বাংলাদেশ ম্যাচে লিড নেয়। সানজিদা আক্তারের বদলে খেলতে নামা শাহেদা আক্তার রিপা ডান দিক থেকে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাবিনাকে। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গোল্ডেন বুট জেতা সাবিনা ঠাণ্ডা মাথায় প্লেসিংয়ে গোলরক্ষকের পাস দিয়ে বল জালে ঠেলে দিয়ে দলকে এগিয়ে দেন।

ডিফেন্ডারদের মনোসংযোগের অভাবে শেষ দিকে গোল খেয়ে জয়বঞ্চিত হন সাবিনারা। ইনজুরি সময়ে নেপালের একটি আক্রমণ ঠিকঠাক মতো ক্লিয়ার করতে পারেননি ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন। নেপালের সেরা খেলোয়াড় সাবিত্রা ভান্ডারি গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন।

সাফের ফাইনালে হারা নেপাল পূর্ণশক্তির দল নিয়ে ঢাকায় এসেছে। হিমালয়ের দেশের মেয়েদের চোখেমুখে ছিল প্রতিশোধের আগুন। কিন্তু মাঠে বাংলাদেশের মেয়েরা প্রাধান্য নিয়ে যোগ্যতর দল হিসেবেই খেলেছে। তবে দশ মাস আগে কাঠমান্ডুতে দুই দলের সাফের ফাইনালে প্রাণবন্ত যে ফুটবল হয়েছিল, তেমনটি হয়নি এই ম্যাচে।

নেপাল সাফের পর চারটি ম্যাচ খেললেও বাংলাদেশ খেললো সাফের পর প্রথম ম্যাচ। নতুন কোচ, দলে ছিলেন না কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। পরিবর্তিত এ দলটি নিয়ে ভয়েভয়েই ছিলেন সবাই। তবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ম্যাচ খেলার যতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল ততটা পড়েনি। বাংলাদেশ নিজেদের মতো করেই খেলতে পেরেছে।

এ ম্যাচে তিনজন খেলোয়াড়ের অভিষেক হয়েছে। আঁখি খাতুনের জায়গায় একাদশে নেওয়া হয়েছিল আফিদা খন্দকার প্রীতিকে। পরে সানজিদার পরিবর্তে শাহেদা আক্তার রিপাকে এবং তহুরা খাতুনের জায়গায় জাপানিকন্যা মাতসুশিমা সুমাইয়াকে নামালে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় এই দুইজনের।

প্রথমার্ধের ম্যাচে দুই দলই নিজেদের রক্ষণ সামলাতে বেশি কৌশল নিয়েছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৪৫ মিনিটে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ বেশ জমে উঠেছিল। দুই দলই সুযোগ পেয়েছিল গোলের। দুই দলই গোল করতে পেরেছে একটি করে।

সিরাত জাহান স্বপ্নার জায়গায় মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন তহুরা খাতুন। তার পেছনে ছিলেন সাবিনা। ডান দিকে সানজিদা ও বাম দিকে কৃষ্ণা। তবে পায়ে ব্যাথা নিয়ে খেলতে নামা কৃষ্ণা নিজেদের নামের সুবিচার করতে পারেনি। তিনি যে আনফিট ছিলেন তা বোঝা গেছে। দ্বিতীয়ার্ধে তার পরিবর্তে কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু মাঠে নামান রিতু পর্না চাকমাকে।

৭৪ মিনিটে ডান দিক দিয়ে ঢুকে কাটব্যাক করেছিলেন সাবিত্রা ভান্ডারি। বল পেয়েছিলেন ফাঁকায় দাঁড়ানো বদলি খেলোয়াড় রেশমি কুমারি। ম্যাচে ফেরার নেপালের সবচয়ে সহজ সুযোগ নস্যাৎ করে দেন রুপনা চাকমা। রেশমির খুব কাছ থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশের গোল রক্ষক।

৭৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সহজ সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের। সাবিনা খাতুন নেপালি গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পরেননি। বিপদ বুঝে আনজিলা সুব্বা এগিয়ে বল ক্লিয়ার করেন নেপালি গোলরক্ষক।

ইনজুরি সময়ে ম্যাচটি ড্র করে জয়ের আনন্দই করেছেন নেপালের মেয়েরা। তাদের জন্য এটা জয়েরই সমান। কারণ, গত সেপ্টেম্বরে এই বাংলাদেশের কাছে সাফের ফাইনালে হেরেছে তারা।

দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দলের বিপক্ষে ড্রয়ের পর মাছে উচ্ছ্বাস করেছে তারা। শেষ বাঁশির পর হাতে থাকা ম্যাচ ছুটে যাওয়ার হতাশায় ডুবেছিলেন সাবিনারা।

ম্যাচের পর বাংলাদেশ কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু সাবিনা মিসটা নিয়েই আফসোস করেছেন, ‘সাবিনার ওই গোলটি হলে ম্যাচটা ওখানেই শেষ হয়ে যেতো।’

দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন গ্যালারিতে বসে সাবিনাদের খেলা দেখেছেন। জিতলে হয়তো খুশি হতেন। তিনি নেপালের বিপক্ষে ড্র দেখেই ফিরে গেছেন ঘরে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com