নিউজ ডেস্ক: তারেক রহমান ও খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের ভোট চোর আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘আমাদের ভোট চোর বলার সাহস হয় কী করে?’ একইসঙ্গে তাদের ভোট না দিতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘তারা দেশকে ধ্বংস করতে চায়।’
স্থানীয় সময় রবিবার লন্ডন ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসেনি’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারেক জিয়া ভোট চোর ছিলেন, তার মা ভোট চোর, আমাদের ভোট চোর বলার সাহস হয় কী করে?’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় দেশ ও দেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করে; জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতা দখল বা চুরি করে ক্ষমতায় আসেনি।’ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কয়টি দল অংশ নিয়েছিল এবং কতটি ভোট পড়েছিল- এই প্রশ্ন করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। আমরা জনগণকে সচেতন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কারো কিছু বলার নেই। সেই নির্বাচনের ফলাফল কী? বিএনপির ২০ দলীয় জোট কতটি আসন পেয়েছিল? ২০-দলীয় জোট নির্বাচনে ২৯টি আসন এবং পরে উপনির্বাচনে একটিসহ মোট ৩০টি আসন জিতেছিল। আর বাকি আসন ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের। আমরা বাকি সব আসন পেয়েছিলাম। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান কোথায় যে তারা এত লাফালাফি করে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) বাংলাদেশকে ধ্বংস করবে। তাই সতর্ক থাকুন, যাতে বিএনপি-জামায়াত চক্র আবার ক্ষমতায় না আসে।’ ‘আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে থাকায় আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হবে’ এমন দৃঢ়তা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, জনগণ আমাদের তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে।’
এ সময় নেতাকর্মীদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। দেশের জনগণ বিএনপি-জামায়াতের ওপর আস্থা রাখবে বলে মনে করেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেন, ‘তারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে এবং এভাবে দেশকে ধ্বংস করেছে।’
জনগণ কীভাবে তাদের প্রতি আস্থা রাখবে- প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘জনগণ জেনে গেছে, তারা (বিএনপি-জামায়াত) চোর, দুর্নীতিবাজ, খুনি, গ্রেনেড হামলাকারী ও লুটেরা এবং তারা খুনিদের পৃষ্ঠপোষক’-এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট অর্থ আত্মসাৎ করে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে।’
এ সময় তারেক রহমানকে তার দুর্নীতির দায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকোর পাচারকৃত প্রায় ৪০ কোটি টাকা সরকার দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা ডেল্টা ২১০০ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
দেশে আর কোনো গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষ থাকবে না- এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বাংলাদেশের কোনো মানুষ অন্নহীন থাকবে না।’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গত ১৪ বছরে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি সংক্ষেপে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী।