ঢাকা: মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন চলমান এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন; বিভিন্ন বোর্ডের সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ক্রয় বিক্রয় করে আসছিল একটি চক্র।
এই সার্টিফিকেট ও মার্কশিট গুলো বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা মূল কাগজ দিয়েই তৈরি করা হয় এবং সেগুলোকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় বা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু লোকের মাধ্যমে অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যাতে অনলাইন ভেরিফিকেশনে সত্য পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ এই চক্রের অন্যতম প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার মিতুকে রামপুরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যে শুক্রবার সকালে লালবাগ থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইয়াসিন আলী ও দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর বুলবুল আহমেদ বিপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিবি জানায়, লালবাগ বড়ঘাট মসজিদ এলাকার কাশ্মিরি গলির একটি বাসায় শুক্রবার সকালে অভিযান চালানো হয়। সেখানে দেখা যায় দুই রুমের বাসায় দামি ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, এমব্রস মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে সংগ্রহ করা ব্ল্যাংক মার্কশিট সার্টিফিকেট এখানে ভুইফুর ব্যক্তিদের নামে সার্টিফিকেট, মার্কশিট, টেস্টিমুনিয়াল ইত্যাদি ছাপানো হতো।
ডিসি মশিউর রহমান বলেন, ‘ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইয়াসিন আলী বিভিন্ন ছাপাখানা থেকে সব রকমের নিরাপত্তা সম্বলিত সুক্ষ জাল সনদের কাগজ ছাপিয়ে এনে নিজেও বিভিন্ন গ্রাহকদেরকে জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, টেস্টিমনিয়াল ও ট্রান্সক্রিপ্ট ইত্যাদি সরবরাহ করতো।
তিনি জানান, তারা দুই ধরনের জালিয়াতি করতো। কোনো ভেরিফিকেশন হবে না এরকম সার্টিফিকেট, মার্কশিট, টেস্টিমনিয়াল সরবরাহ করা। আরেকটি দেশে বিদেশে অনলাইনে ভেরিফিকেশন হবে এরকম মার্কশিট, সার্টিফিকেট ইত্যাদি সরবরাহ করা।
মশিউর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বোর্ডের বেশ কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তির নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। যারা অনলাইন ভেরিফিকেশন করে সার্টিফিকেট বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত। লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া এ সকল প্রতারকদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।