ঢাকা : ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য আগামী ২০ মে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম পর্যায়ে ৬৪ জেলার ১৩৫ উপজেলায় এই কার্যক্রম চলবে। তথ্য সংগ্রহ করার এই কার্যক্রম চলবে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত। এরপর ১০ জুন থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
নির্দেশনায় বলা হয়, এবার তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে সংগ্রহ করা হবে। এক্ষেত্রে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারীদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। অর্থাৎ ১৬ বছর বয়সীদের তথ্যও নেওয়া হবে। পরবর্তীতে বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় এদের নাম যুক্ত হয়ে যাবে। তারা ভোটার তালিকায় যুক্ত হবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালে।
ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, এ কর্মসূচিতে ভোটার তালিকা হতে মৃত ভোটারের নাম কর্তন এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের বিষয়েও কার্যক্রম গৃহিত হবে।
এই বিষয়ে ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ২০ মে থেকে ১৩৫টি উপজেলায় নাগরিকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য উপজেলায় শুরু করা হবে। স্থানীয়ভাবে সেই ও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
২০ মে থেকে যে ১৩৫ উপজেলায় তথ্য সংগ্রহ শুরু:
ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরাণীগঞ্জ, সাভার, সূত্রাপুর, কোতয়ালী ও ডেমরা, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালিগঞ্জ ও কাপাসিয়া, পঞ্চগড়ের সদর, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর, দিনাজপুরের সদর ও নবাবগঞ্জ, নীলফামারীর সদর ও ডিমলা, লালমনিরহাটের সদর, রংপুরের সদর ও পীরগঞ্জ, কুড়িগ্রামের সদর ও রৌমারী, গাইবান্ধার সদর ও ফুলছড়ি, জয়পুরহাটের সদর, বগুড়ার সদর, দুপচাচিয়া ও সারিয়াকান্দি, চাপাইনবাবগঞ্জের লোলাহাট, নওগাঁর সদর, পোরশা ও বদলগাছি, রাজশাহীর বোয়ালিয়া ও রাজপাড়া, নাটোরের সদর ও সিংড়া, সিরাজগঞ্জের সদর ও তাড়াশ, পাবনার সদর ও ঈশ্বরদী, মেহেরপুর সদর, কুষ্টিয়া সদর ও দৌলতপুর, চুয়াডাঙ্গার সদর, ঝিনাইদহের সদর ও হরিণাকুন্ডু, যশোরের সদর, অভয়নগর ও বাঘারপাড়া, মাগুরার সদর, নড়াইলের সদর, বাগেরহাটের সদর ও শরণখোলা, খুলনার সদর, সোনাডাঙ্গা ও দৌলতপুর, সাতক্ষীরার সদর ও তালা, বরগুনার সদর, পটুয়াখালীর সদর ও গলাচিপা, ভোলার সদর ও মনপুরা, বরিশালের সদর, আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী, ঝালকাঠির সদর, পিরোজপুরের সদর ও নেছারাবাদ।
গোপালগঞ্জের সদর ও টুঙ্গীপাড়া, মাদারীপুরের কালকিনী, শরিয়তপুরের সদর ও ডামুড্যা, ফরিদপুরের ভাংগা ও সদরপুর, রাজবাড়ীর সদর, মানিকগঞ্জের সদর ও শিবালয়, মুন্সীগঞ্জের সদর ও গজারিয়া, নরসিংদীর মনোহরদী ও পলাশ, নারায়ণগঞ্জের সদর ও আড়াইহাজার, টাঙ্গাইলের সদর, সখীপুর ও ঘাটাইল, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও মাদারগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবর্দী, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ ও গফরগাঁও, নেত্রকোনার সদর ও কলমাকান্দা, কিশোরগঞ্জের সদর, পাকুন্দিয়া ও তাড়াইল, সুনামগঞ্জের সদর ও বিশ্বম্ভরপুর, সিলেটের সদর, বালাগঞ্জ ও কানাইঘাট, মৌলভীবাজারের সদর ও শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জের সদর ও বাহুবল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর ও নাসিরনগর, কুষ্টিয়ার লালমাই, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, লাখসাম ও হোমনা, চাঁদপুরের সদর ও হাজীগঞ্জ, ফেনীর সদর ও পরশুরাম, নোয়াখালীর সদর, কোম্পানীগঞ্জ ও সেনবাগ, লক্ষ্মীপুরের সদর ও রামগতি, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডু, মীরসরাই, কর্ণফুলী, লোহাগড়া, চন্দনাইশ ও আনোয়ারা, কক্সবাজারের সদর ও কুতুবদিয়া, খাগড়াছড়ির সদর, রাঙ্গামাটির সদর এবং বান্দরবানের সদর উপজেলা।
সর্বশেষ গত ২ মার্চ ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৪৫৪ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।
ইসি সূত্র জানায়, ২০০৭-২০০৮ সালের ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৭ এবং সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেইবার একইসঙ্গে তিন বছরের তথ্য অর্থাৎ যাদের বয়স ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।