আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালেবান সরকার দেশটিতে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ ৭ মাস বন্ধ থাকার পর মেয়েদের স্কুল খুলে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আবার তা বন্ধ করে দিয়েছে তারা। গত আগস্টে ক্ষমতা গ্রহণের পর নারীশিক্ষা নিয়ে ইতিবাচক হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান। কিন্তু বুধবার তাৎক্ষণিকভাবে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ায় নারীশিক্ষার বিষয়ে তাদের নীতি নিয়ে নতুন করে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতেই তালেবান সরকার মেয়েদের স্কুলে ফেরানোর ইঙ্গিত দেয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার সকাল থেকেই রাজধানী কাবুলসহ দেশটির বিভিন্ন শহরের স্কুলগুলোতে আসা শুরু করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু হঠাৎ বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় মন খারাপ করে ফিরে যেতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
তবে হঠাৎ করে তালেবান কেন এই পদক্ষেপ নিল, তার সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন পর মেয়েদের স্কুল খোলা উপলক্ষে সকাল থেকেই রাজধানীর স্কুলগুলোতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আজিজ আহমদ রায়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, আফগানিস্তান, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বদলায়নি।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের কিছু সাংস্কৃতিক বিধিনিষেধ আছে। এসব কারণে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রধান মুখপাত্র বিষয়টি নিয়ে আরও ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালেবানের এক নেতা বলেছেন, গত মঙ্গলবার তালেবানের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র ও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের শহর কান্দাহারে একটি বৈঠক করেছেন শীর্ষ নেতারা। ওই বৈঠকে স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কয়েক সপ্তাহ আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রায়ান স্কুল খোলার তারিখ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া তালেবানের দায়িত্ব।
স্কুল খোলার আগে তালেবান ১২ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের আলাদাভাবে বসানো এবং ইসলামি নিয়ম মেনেই স্কুলগুলো পরিচালনার করার ওপর জোর দিয়ে আসছিল।
হঠাৎ স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তে হৃদয়বিদারক চিত্র দেখা গেছে রাজধানী কাবুলের বিভিন্ন গার্লস স্কুলে। কাবুলের জারগোনা হাইস্কুলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলাকালে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা কান্না করতে করতে বের হয়ে গেছে।
কাবুলের ওমরা খান গার্লস স্কুলের শিক্ষক পালওয়াশা বলেন, ‘আমি ছাত্রীদের কাঁদতে কাঁদতে শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে যেতে দেখেছি। তাদের কান্না দেখাটা খুবই কষ্টকর।’
এদিকে, স্কুল বন্ধ করায় তালেবানের ওপর আস্থা কমে গেছে বলে টুইট করেছেন আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত রিনা আমিরি।