শিরোনাম
লিলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় লিভারপুল বঙ্গভবন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এখনো ‘অ্যাডমিন ক্যাডার’ হিসেবে কর্মরত সাবেক আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এস কে সুরের গোপন ভল্টের সন্ধান বলিউড থেকে সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কারণ জানালেন নার্গিস মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুর্নীতির মহারাজা ইনাম ইলাহী চৌধুরী লস অ্যাঞ্জেলেসে কষ্টের কথা জানান নোরা শেষ মুহূর্তে উসমান ম্যাজিক, হ্যাটট্রিক শিরোপা পিএসজির আসিফ নজরুলকে শেখ হাসিনার বিষয়ে যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া নারী সহকর্মীকে খুন করে দেহ ২৬ টুকরো, অতঃপর…… ২৯ সেপ্টেম্বর দেখা যাবে দ্বিতীয় চাঁদ, থাকবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত

তালেবানের কাছে মাথানত ভারতের!

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় ভারতীয় দূতাবাসে তালেবানের মুখোমুখি হয়ে ভারতের ইচ্ছা তালিকা পেশ করলেন রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তাল। গোপনীয়তার ঘেরাটোপ সরিয়ে নয়াদিল্লি আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রচারও করল। দর—কষাকষির এক নতুন অধ্যায়ও শুরু হলো। আগামী দিনে এ গতিপথের চরিত্র কী হবে, এখনই অনুমান করা কঠিন।

তালেবান নেতা স্তানিকজাই যা বলেন, দিল্লির সাউথ ব্লকের কাছে তা অবশ্যই মধুর ধ্বনি। তিনি বলেন, এ উপমহাদেশে ভারতের গুরুত্ব অপরিসীম। ভারতের সঙ্গে তালেবান তাই সব ধরনের সম্পর্ক ধরে রাখতে আগ্রহী। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক। ভারতের উত্তরাখন্ডের রাজধানী দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমির এ প্রাক্তন ছাত্রের সংক্ষিপ্ত বার্তায় স্পষ্ট, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের স্বীকৃতি লাভ তালেবানের কাছে কতটা কাক্সিক্ষত। সেই স্তানিকজাইয়ের সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের প্রকাশ্য বৈঠক এটুকু বুঝিয়ে দিচ্ছে, সন্ত্রাসবাদী বলে একঘরে না করে ‘বাস্তববাদী’ ভারত তালেবানের মন বুঝতে চায় এবং কাজের সম্পর্ক তৈরিতে আগ্রহী।

তালেবান সরকারের চরিত্র ও মানসিকতার বদল ঘটেছে কি না, বোঝার পর আসবে স্বীকৃতির প্রশ্ন। কত দ্রুত অথবা কতটা দেরিতে সেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে অথবা আদৌ হয় কি না, দোলাচল ও জল্পনা তা নিয়েই। সরকারিভাবে ভারত এখন ‘অপেক্ষা ও অবলোকন’ নীতিতে বিশ্বাসী। আফগানিস্তানের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো বিকল্পও সম্ভবত নেই।

অবশ্য এর মধ্যে ভারতকে আরও এক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। তালেবান নেতৃত্ব অবশ্যই চাইবে তাদের ওপর (বিশেষ করে হাক্কানি নেটওয়ার্ক) জাতিসংঘের যেসব নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তার প্রত্যাহার। সিরাজউদ্দিন হাক্কানিসহ একাধিক তালেবান নেতার ওপর আর্থিক লেনদেন, অস্ত্র কেনাবেচা ও যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তালেবান তা তুলে নিতে বলেছে। আমেরিকার সঙ্গে চুক্তিতে তারা এ বিষয়ের ওপর জোরও দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তারা অবশ্যই চীন ও রাশিয়ার মুখাপেক্ষী হবে। জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সক্রিয় হলে কী করবে ভারত?

গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে ভারত দুই ধরনের লগ্নি করেছে। একটি অর্থলগ্নি, অন্যটি মানবসম্পদের সৃষ্টি। অবকাঠামো নির্মাণে ভারত যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই দেশে যা করেছে, আর কোনো দেশ তা করেনি। প্রতিটি প্রদেশে কমবেশি ৫০০ প্রকল্পে ভারত তার বন্ধুতার ছাপ রেখে গেছে। দুই দশকে অর্জিত এই ‘গুডউইল’ এক ধাক্কায় চুরমার হোক, ভারত তা চায় না। তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের তাগিদের এটা একটা বড় কারণ।

দ্বিতীয় লক্ষ্য, তালেবানের যে অংশ অন্ধ ভারতবিরোধিতায় বিশ্বাসী, তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা। সেই নিয়ন্ত্রণ প্রকারান্তরে পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণেরই শামিল। বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় নীতি যাতে প্রতিবন্ধক না হয়, তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম প্রধান কারণও তা।

তালেবান নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপের মধ্য দিয়ে ভারতের এতদিনকার এক নীতিরও জলাঞ্জলি হলো। দোহায় তালেবানদের সঙ্গে গোপন সংলাপের খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে উপত্যকার রাজনীতিকেরা বন্ধ আলোচনা শুরুর ওপর জোর দিয়েছেন।

পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি সরাসরি প্রশ্ন করেছেন, তালেবানের সঙ্গে কথা বলা গেলে পাকিস্তানের সঙ্গে নয় কেন? সন্দেহ নেই, দোহায় দীপক মিত্তাল—স্তানিকজাই বৈঠকের পর ‘সন্ত্রাস ও সংলাপ’সংক্রান্ত ভারতীয় নীতি অবশ্যই ভোঁতা হয়ে যাবে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে হাক্কানি গোষ্ঠীসহ সমগ্র তালেবান বেরিয়ে এলে পাকিস্তানের অহংবোধও তীব্র হবে। কাশ্মীর পরিস্থিতিরও রং বদল হতে পারে। তালেবানের আফগানিস্তান দখল সেই অর্থে ভূরাজনীতির ‘গেম চেঞ্জার’।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com