শাহজালালে আগুনে পুড়ল কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি পণ্য, যাত্রী-স্বজনদের দুর্ভোগ

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন প্রায় ৭ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে । ফায়ার সার্ভিসের ৩৭ টি ইউনিটসহ অন্যান্য বাহিনীর অক্লান্ত চেষ্টায় রাত ৯টা ১৮ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে এই ভয়াবহ আগুন। তবে রাত ৩টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করা যায়নি।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর আনুমানিক ২টা ১৫ মিনিটের দিকে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুন লাগে। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে একে একে ঘটনাস্থলে আসে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। পাশাপাশি বিমান বাহিনী ও নৌ-বাহিনীর সদস্যরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে নামে। তাদের সহযোগিতায় আসে পুলিশ, র্যা ব, আনসার ও সেনাবাহিনী।

প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে পুড়ে গেছে বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো শাখায় থাকা হাজার হাজার কোটি টাকার মালামাল। বিমানবন্দরের এই শাখায় রাখা ছিল বিদেশ থেকে আমদানি করা পোশাক, ইলেকট্রনিকস পণ্য ও রাসায়নিকসহ বিভিন্ন পণ্য।

বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের পাশেই ছিল এই আমদানি কার্গো শাখা। ঠিক কোথায় থেকে আগুনের সূত্রপাত তা এখনো জানা না গেলেও সেখানে কুরিয়ার সার্ভিসের গোডাউন, ফার্মাসিউটিক্যাল ও ভ্যারাইটিজ পণ্যের গোডাউন, কুল রুম, ডেঞ্জারাস গুডসের (বিস্ফোরক দ্রব্য) গোডাউন, আমদানি করা মোবাইলের গোডাউন ও বিজিএমইর গোডাউন ছিল।

আগুনে আমদানি করা সব পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর। তামিম এক্সপ্রেস লিমিটেড নামের একটি কুরিয়ার কোম্পানির পরিচালক সুলতান আহমেদ বলেন, সকালেই তার কোম্পানির আড়াই টন মালামাল নেমেছে কার্গো শাখায়। শনিবার অর্ধদিবস কার্যক্রম চলায় কোনো মালামালই তিনি বের করতে পারেননি। সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।

বিমানবন্দরের ভেতরে বিদেশগামীদের ভোগান্তি, বাইরে স্বজনদের অপেক্ষা:
অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমানবন্দরে প্রায় ৭ ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন দেশে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা। ফ্লাইট বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বিমানবন্দরের টার্মিনালের ভেতরে ও বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অনেকে কী করবেন, তা নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েন। চাকরি হারানোর শঙ্কায়ও পড়েন কেউ কেউ।

সিঙ্গাপুর যেতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন রমজান আহমেদ। তিনি সিঙ্গাপুরে একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। রাত ১১টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। আগামী সোমবার (২০ অক্টোবর) তার কাজে যোগ দেওয়ার কথা।

রাত ৮টার দিকে রমজান আহমেদ নামে একজন বলেন, ছুটিতে দেশে এসেছিলাম। এখন ফেরত যাচ্ছি। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিমানবন্দরে এসে দেখি আগুনের কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। পরিবারের যারা সঙ্গে এসেছিলেন তারা আমাকে বিমানবন্দরে দিয়ে চলে গেছেন। এখন কী করব বুঝতে পারছি না। কখন আবার ফ্লাইট দেবে সেটাও বুঝতে পারছি না। সোমবার আমার কাজে যোগ দেওয়ার কথা। যদি সময়মতো যেতে না পারি কোম্পানি তাড়িয়ে দিতে পারে, পারমিট ক্যানসেল করতে পারে।

এদিকে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের নিতে বিমানবন্দরের বাইরে স্বজনদেরও অপেক্ষায় উৎকণ্ঠাময় সময় কাটাতে হয়েছে। কখন স্বজন দেশে ফিরবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে প্রায় সবাই।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com