৯৯ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক হয় যে চার কারণে

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

একেবারে সুস্থ-সবল মানুষ, কোনো রোগ-অসুখ নেই—হঠাৎ একদিন বুকে ব্যথা, তারপর ধরা পড়ল হার্ট অ্যাটাক! এমন ঘটনা এখন অস্বাভাবিক নয়। নিঃশব্দেই অনেক সময় হৃদ্‌যন্ত্রে রক্ত জমাট বাঁধে, অথচ কোনো সতর্ক সংকেতও মেলে না—না বুকে ব্যথা, না রাতে ঘাম, না অন্য কোনো লক্ষণ। অথচ এর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভয়াবহ বিপদ।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদ্‌রোগের পেছনে চারটি প্রধান কারণই দায়ী প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে—যেগুলো চিহ্নিত করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্‌থ এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন।

হার্ট অ্যাটাকের মূল চার কারণ

উচ্চ রক্তচাপ

উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভারতে প্রতি বছর ১০ লাখেরও মানুষ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্ত হন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে স্ট্রোক বা হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। একটা সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একজন সুস্থ ব্যক্তির রক্তচাপের স্বাভাবিক মাপ হিসেবে ১২০/৮০-কে নির্দিষ্ট করে। পরে জীবনযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই অঙ্কই তারা বাড়িয়ে করে ১৩০। সম্প্রতি প্রকাশিত আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশিকা অনুযায়ীও এই মাপকে ১৩০ ধরা হয়েছে। তবে এর বেশি হওয়া মানেই বিপদ। তখন রক্তবাহী ধমনীর উপর চাপ বাড়ে। ফলে হার্টের স্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে।

উচ্চ কোলেস্টেরল

কোলেস্টেরলের ভালো ও মন্দ দুই-ই আছে। মন্দ কোলেস্টেরলের ফাঁদে পড়লেই হার্টের মতিগতি বদলে যায়। বিগড়ে যায় তার ছন্দ। খারাপ কোলেস্টেরল বাড়লে রক্তনালির মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ে। আর রক্ত জমাট বাঁধলে হৎস্পন্দন অনিয়মিত হবেই। তখন হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।

রক্তে অধিক শর্করা

রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে থেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে, যাকে বলে ‘প্লাক’। এর ফলে ধমনী সঙ্কীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধা দিতে পারে। এই ব্লকেজ থেকেই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে।

অতিরিক্ত ধূমপান

অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে শরীরের নানাভাবে ক্ষতি হয়। ধূমপানের কারণে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। যে কারণে ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এর ফলে হৃৎপিণ্ড আর মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। সঙ্গে রক্তনালিতে চর্বি, খারাপ কোলেস্টেরল এবং ক্যালশিয়াম জমতে থাকে। যে কারণে রক্তনালির দেওয়াল পুরু হতে থাকে যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

হার্ট ভালো রাখতে তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। রক্তে শর্করা যাতে না বাড়ে, সে কারণে রোজের খাওয়া-দাওয়ায় নজর দিতে হবে। সুষম আহার জরুরি, পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চাও প্রয়োজন। হার্টের রোগ তলে তলে মাথাচাড়া দিচ্ছে কি না, তা নির্ণয় করার অনেকগুলো পরীক্ষা আছে, যেমন— অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম, ইলেক্ট্রোকার্ডিয়োগ্রাম, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম, স্ট্রেস টেস্ট, কার্ডিয়াক এমআরআই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেই সব পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com