মুখে গণহত্যা বলে গোপনে ইসলাইলকে সাহায্য করেছে ৬ মুসলিম দেশ

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ সহায়তার বদলে গাজাবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে এক গোপন মার্কিন নথিতে জানা গেছে। এই মুসলিম দেশগুলো মুখে গণহত্যাকে ‘নৃশংস-বর্বর’ বললেও গোপনে নানাভাবে ইসরাইলকে সাহায্য করেছে। এমনকি সামরিক সহায়তা দিয়েছে ইসরাইলকে। তারা প্রকৃতপক্ষে মধ্যস্থতা নয়, গাজার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আরব দেশগুলোর এই মার্কিন দোসরদের প্রথম কাতারেই রয়েছে সৌদি আরবের নাম। বাহরাইন, মিশর, জর্ডান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) রয়েছে বিশ্বাসঘাতকদের মধ্যে ।

সদ্য ফাঁস হওয়া এক মার্কিন নথিতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ওই নথি পেয়ে শনিবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসরাইলের সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো নামে গোপন সামরিক জোটে যুক্ত হয়ে কাজ করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা শুরু করে ইসরাইল। সেদিন থেকেই গাজার অসহায় মানুষের অধিকার নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছেন আরব নেতারা। তবে মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশের ভূমিকা যুদ্ধ বন্ধে ছিল একেবারেই নীরব দর্শকের মতো।

ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের হাতে আসা মার্কিন গোপন নথিতে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। নথিতে বলা হয়, ২০২২ সালে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড বা সেন্টকমের নেতৃত্বে এই জোট গঠিত হয়। জোটটির মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের হুমকি মোকাবিলা। তবে বাস্তবে এই জোটের কার্যক্রমের বড় অংশই ছিল গাজা ও হামাসবিরোধী যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়। মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই গোপন নেটওয়ার্কে অংশ নেওয়া দেশগুলো একসঙ্গে টানেল যুদ্ধ মোকাবিলা, আকাশ প্রতিরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। আর গাজায় বোমাবর্ষণে এই কৌশল ব্যবহার করেছে ইসরাইল।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব দেশগুলো পর্দার আড়ালে ইসরাইলি সেনা ও মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়া, গোপন বৈঠক ও তথ্য আদান-প্রদান চালিয়ে গেছে। ছয়টি আরব দেশ ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাডার ও সেন্সর নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়, যার মাধ্যমে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন মোকাবিলার নামে তেল আবিবের সঙ্গে কার্যত একীভূত হয় তাদের সেনাবাহিনী। গত সেপ্টেম্বর মাসে দোহায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হন একাধিক হামাস নেতা। তখন আরব-ইসরাইল গোপন সহযোগিতা বড় সংকটে পড়ে। ওই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে কাতারের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আরব বিশ্বের নেতারা প্রকাশ্যে যা বলছেন, কৌশলগত কারণে গোপনে তার উল্টোটা করছেন। কারণ তাদের কাছে ইরানের আঞ্চলিক হুমকি ফিলিস্তিন সমস্যার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমনকি আরবদের এই দ্বৈত অবস্থানের কারণেই গাজাবাসীর সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com