পাহাড়ে অধিকাংশ সংঘাতে দায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজব

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫

পাহাড়ে সব সহিংসতার পেছনে ‘ভয়ংকর আগুন’ হিসেবে কাজ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব। কোনো ঘটনা ঘটলে, স্বার্থান্বেষী পক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে দেয় নানামুখি গুজব। ফলে অস্থির হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। লেগে যায় সংঘাত। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে সহিংসতা ঘিরে এমন ২০টি গুজব ছড়ানো হয়। নাগরিক সমাজের দাবি, গুজব প্রতিরোধে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া না হলে পাহাড়ে সংঘাত ঠেকানো কঠিন।

গেল মাসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয় খাগড়াছড়ি। এই উত্তেজনার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে আরও ঘোলাটে করা হয় পরিস্থিতি। যাতে মুখোমুখি হয়ে পড়ে পাহাড়ি-বাঙালি। যার সবশেষ পরিণতি গুইমারার রামসু বাজারে ভয়াবহ সহিংসতা এবং তিনজনের প্রাণহানি।

ফ্যাক্ট চেক করা বিভিন্ন সংস্থার তথ্য মতে, খাগড়াছড়ির ঘটনায় ২০টির বেশি গুজব ছড়ায় পাহাড়ি-বাঙালি দুপক্ষই। যেখানে ইন্দোনেশিয়া, নেপাল ও ভারতসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা সময়ে সংঘটিত সহিংসতার ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করা হয় খাগড়াছড়ির ঘটনা বলে। এতে অস্থির হয়ে উঠে পাহাড়।

কেবল এটিই নয়, গত কয়েকবছরে পাহাড়ে যেসব সহিংসতা হয়েছে তার ৮০ শতাংশের পেছনেই রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া গুজব। যার কারণে ছোট একটি ঘটনাও বড় ঘটনায় রূপ নেয়। নাগরিক সমাজের দাবি, প্রতিটি গুজব ছড়ায় স্বার্থান্বেষী তৃতীয় পক্ষ। এর ক্ষতিকর প্রভাব না ভেবে, তা শেয়ার করে অনেক মানুষ। যার বড় অংশই কিশোর-তরুণ।

বান্দরবান জেলা সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অংচ মং মারমা বলেন, ছোট গুজব থেকে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে। গুজবে কোনোভাবেই কান দেয়া যাবে না।

এনজিও কর্মী নুকু চাকমা বলেন, তরুণরা বেশি উদগ্রিব থাকে, যেকোনো একটা খবর শুনলেই তা শেয়ার করবে। এই বিষয়টি তরুণদের মধ্যে বেশি কাজ করে।

নাগরিক সমাজের মতে, গুজবের ভয়াবহতা সম্পর্কে বাড়াতে হবে জনসচেতনতা। স্থানীয় জনগণ ও সরকারের মধ্যে উন্নয়ন করতে হবে সম্পর্ক। এজন্য এগিয়ে আসতে হবে প্রশাসনকেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের নেতা মোশারফ হোসেন বলেন, ধর্মীয় বিষয়গুলোর ব্যাপারে জনগণ সচেতন হলে, তাহলেই এসব গুজব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

রাঙ্গামাটি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোছাইন বলেন, যখনই কোনো গুজব ছড়ানো হয়, তখনই আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। যাতে বড় ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে।

গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা না গেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ কঠিন বলেও মত বিশিষ্টজনদের।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com