প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নিশ্চিত করার ঘোষণার পর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের মধ্যে। প্রধান উপদেষ্টার প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘোষণার পর ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
এরই অংশ হিসেবে চলতি মাসেই দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীদের এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম জন্য যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। সেখানে তারা ৪টি স্টেটে দূতাবাস ও কনস্যুলেটে কর্মরতদের কার্ড সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন । প্রশিক্ষণ শেষে আগামী ১ অক্টোবর থেকেই প্রবাসীরা এনআইডির সেবা নিউ ইয়র্ক থেকে গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক ।
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের একটি টেকনিক্যাল টিম ১৪ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করবে। নিউ ইয়র্কসহ ওয়াশিংটন ডিসি, মিয়ামি ও লস অ্যাঞ্জেলেসে ভোটার নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান এবং ভোটদানের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিস্তারিত তুলে ধরা হবে ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীদের মধ্যে এনআইডি বিতরণ ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত রোডম্যাপ অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব প্রবাসীরা ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এছাড়াও ব্যালেট পেপার আর ভোট দেয়ার পদ্ধতি নিয়েও কমিউনিটিতে রয়েছে ব্যাপক আলোচনা -সমালোচনা ।
নিউ জার্সির বাসিন্দা বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আমির উদ্দিন জানান, এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার সংবাদ অবশ্যই ইতিবাচক । তবে আগামী ফেব্রুয়ারি পূর্বে সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে তার ।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব তোফায়েল লিটন চৌধুরী বলেন প্রবাসীরা ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃত। স্বাধীনতার পর থেকে শুরু করে দেশ গড়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদান কম নয়। তাদের ভোটাধিকারের দাবী এখনই উপযুক্ত সময় ।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুসারে প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ১-৫ ডিসেম্বর ভোটার তালিকা চুড়ান্ত মুদ্রণ হবে । আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠানো হবে। যেখানে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতীক থাকবে, নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে তারা ভোট দিয়ে দেশে ব্যালট পেপার ফেরত পাঠাবেন।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বাংলাদেশি জন্মনিবন্ধন সনদের কপি (অনলাইন ভেরিফায়েড), পাসপোর্ট সাইজের এক কপি রঙিন ছবি, আবেদনকারীর বাবা-মায়ের এনআইডির কপি/অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের কপি/বাংলাদেশি মৃত্যুসনদের কপি (মৃত হলে)/পাসপোর্টের কপি/দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)সহ প্রায় ১১ ধরনের দলিল প্রয়োজন হবে । তবে সব দলিল সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলেও জানানো হয়েছে ।