সম্প্রতি এক গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন অবহেলার হৃদরোগে নারীরা মারা যাচ্ছেন।
বিভিন্ন সমীক্ষার তথ্য অনুসারে প্রতিবছর সবচেয়ে বেশি মানুষই মারা যান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অত্যাধিক মানসকি চাপ, র্কমব্যস্ত জীবন ও অনয়িমতি জীবনযাপনের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন অবহেলার হৃদরোগে নারীরা মারা যাচ্ছেন। কারণ নারীদের ক্ষেত্রে কার্ডিওভাসকুলার রোগ এখনও ‘আন্ডার ট্রিটেড পর্যায়ে আছে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্টের অবস্থা নারীদের মৃত্যুর জন্য প্রধান কারণ। তবে নারীদের ক্ষেত্রে হার্টের বিভিন্ন রোগকে ‘উপেক্ষিত’ হচ্ছে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন, কার্ডিওভাসকিউলার ডিজিজ (সিভিডি) ‘পুরুষের একটি রোগ’ এই ধারণা ভুল। এই ভুল ধারণা নারীদের প্রতি হার্টের বিভিন্ন রোগকে গুরুত্ব দিতে ও চিকিৎসাহীন রয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘হার্ট’-এ, যেখানে শিক্ষাবিদরা বলেন, বেশিরভাগ হৃদরোগ ‘প্রতিরোধযোগ্য’ হওয়ায় ‘সিভিডিতে আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো যত্নের সমতা নিশ্চিত করতে’ আরও কিছু করা দরকার। এ গবেষণার প্রধান লেখক ও অধ্যাপক বিজয় কুনাডিয়ান বলেন, হৃদরোগ এক ধরনের করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ধমনীর রোগ, যা যুক্তরাজ্য ও গোটা বিশ্বের নারীদের জন্য এক নম্বর প্রাণঘাতি রোগ।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, নারীদের বেলায় এ ধরনের লক্ষণ উপেক্ষা করার রেওয়াজ রয়েছে বা নারীদের বলা হচ্ছে, তাদের দেহে এ ধরনের কোনও সমস্যা নেই বা তাদেরকে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে নারীরা হার্টের সমস্যায় ভোগেন।পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, হার্টের রোগের ক্ষেত্রে নারীরা কম চিকিৎসা পান।
অধ্যাপক কুনাডিয়ান নারীদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আর অবহেলা করতে পারি না। এ নিয়ে আমাদের কিছু করার সময় এসেছে। নারীরা উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তাদের জীবন বাঁচানো যাবে। যুক্তরাজ্যজুড়ে ৩৩ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল ‘হার্ট’ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় লিখেছেন, বর্তমানে দেশটির ৩৬ লাখেরও বেশি নারী ‘ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বা করোনারি হার্ট ডিজিজ’-এ ভুগছেন, যা প্রতি ১৪ জন নারীর মধ্যে একজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
‘ব্রিটিশ কার্ডিওভাসকিউলার সোসাইটি’র সঙ্গে যুক্ত এ গবেষণা দলটি বলেছে, হৃদরোগ কেবল পুরুষের রোগ এই ভুল ধারণাটিই নারীদের মধ্যে সিভিডি রোগের কম স্বীকৃতি ও কম চিকিৎসার জন্য দায়ী। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে একটি ‘বৈষম্য’ও নির্দেশ করেছেন গবেষকরা, যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারীদের নির্দিষ্ট কোনো রোগে চিকিৎসা বা ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা পাওয়ার বেলাতেও সম্ভাবনা কম থাকে।