আসামে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি, মৃত বেড়ে ১৫

স্কাই নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২ জুন, ২০২৪

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রাজ্যটিতে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। এছাড়া বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে তিন নদীর পানি।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৬ লাখের গণ্ডি। রোববার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই এবং সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল পরবর্তী বৃষ্টির জেরে বন্যা হয়েছে আসামে। দিনে দিনে সেই পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। শনিবার রাজ্যটিতে নতুন করে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। আসাম সরকারের বন্যা সংক্রান্ত বুলেটিনে একথা জানানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বন্যায় গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গেছে আসামে। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। মানুষের পাশাপাশি ৮৯টি পশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে শনিবার। তবে এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে রাজ্যটির গুরুত্বপূর্ণ তিনটি নদীর পানি। সেখানে পানি না কমলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

অবশ্য গত শুক্রবার পর্যন্ত আসামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লাখ। সেখানে একদিন পরই অর্থাৎ শনিবার তা ছাড়িয়ে গেছে ৬ লাখের গণ্ডি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যটির নগাওঁ জেলা। শুধু সেখানেই বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা আড়াই লাখের বেশি।

আসামের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পরিসংখ্যান বলছে, এখনও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের অন্তত ১০টি জেলা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, আসামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী হচ্ছে বরাক। গত বৃহস্পতিবার থেকে সেই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের উপনদী কোপিলি, বরাকের শাখা নদী কুশিয়ারার পানিও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। ভেসে গেছে রাস্তাঘাট, সেতু এবং ঘরবাড়ি। চাষাবাদের বহু জমিও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে শনিবার আসামে নতুন করে যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বন্যার কারণে, তারা কছাড়, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকাণ্ডী জেলার বাসিন্দা। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে দিন-রাত উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। বহু জায়গার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রভাব পড়েছে ট্রেন চলাচলেও।

এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আসামের পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন নির্দেশনা জারি করে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। রাতে স্থানীয়দের চলাচলেও জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। রাজধানী শহর গুয়াহাটির বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয় আসামে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। সেই কারণেই রাজ্যের বহু স্থানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।

এমন অবস্থায় ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। আসামের মূল নদী যেমন সুবানসিরি, জিয়াভারালি এবং কোপিলিতে আরও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এতে করে তিনসুকিয়া, দাররাং এবং নলবাড়ির মতো জেলাগুলো ক্ষতির মুখে পড়ছে বলেও জানানো হয়েছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 Skynews24.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com